কারাগারের কনডেম সেলে বরগুনার রিফাত শরীফ হ”/ত্যাকান্ডের ঘটনায় আলোচিত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ২ বছর ১ মাস ধরে ১০ হাত দৈর্ঘ্য ও ৬ হাত প্রস্থের ঘরে থাকতে হয় তার, রয়েছে বারান্দায় যাবার সুযোগ। রিফাত হ”/ত্যার দায়ে মৃ”ত্যুদ/ণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিন্নি স্বামী হ’/’ত্যার প্রধান আসামী হয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে রয়েছেন। সপ্তাহে পরিবারের সঙ্গে ৫ মিনিট করে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ আছে তার। অন্য আসামিরা সেলের বাইরে যেতে পারলেও সর্বোচ্চ দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ২৪ ঘন্টা কনডেম সেলে থাকতে হয়। মিন্নির সময় কাটে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে। কারাগার সূত্রে জানা গেল অন্য সব খাবার খেলেও মাংস খান না মিন্নি।
বরগুনার বিতর্কিত রিফাত শরীফ হ’/ত্যা মামলায় ফাঁ”সির দণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন। রোববার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বরগুনার বিতর্কিত রিফাত শরীফ হ/”ত্যা মামলায় মৃ”ত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নি খালাস চেয়ে আপিল করেন। স্বামীকে হ”/ত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মিন্নিকে ফাঁ”সির আদেশ দেন বরগুনার জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।
রায়ে মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃ”ত্যুদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাকি চারজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ২৯ অক্টোবর মিন্নিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
২০১৯ সালের ২৬ জুন, রিফাত শরীফকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্যে কু”পিয়ে জখম করে নয়ন বন্ডের কিশোর গ্যাং ‘বন্ড বাহিনী’। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযু”দ্ধে নিহ’/ত হন ঘটনার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড।
ঘটনার ২০ দিন পর ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ঘটনায় মিন্নি জড়িত বলে মনে করায় ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। এরপর একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত হ”/ত্যা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে ১০ জনকে প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১৪ জনকে নাবালক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১ জানুয়ারী ২০২০-এ অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। সাক্ষ্য-প্রমাণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছর, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। বাকি তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
এ মামলায় মৃ”/ত্যুদণ্ড পেয়েছেন মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৪), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২২), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (২০), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৩), মোঃ হাসান (২০) এবং আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (২০)।
এদিকে মিন্নির আইনজীবী বলেন, মিন্নি স্বামী রিফাতের খু”/নের ঘটনায় সরাসরি কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। যার কারণে জামিন পাওয়া র হক রয়েছে টার এবং ভবিষ্যতে এই মামলা থেকে নিঃশর্তভাবে খালাস পাবে সে, এমনটাই আশা করেছেন তিনি। এদিকে ২ বছর আগে কয়েদির পোশাক পরা মিন্নির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবিটিতে তাকে হতাশাগ্রস্ত দেখায়।