সিটেল ও সুনামগঞ্জের বন্যায় ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্মরনকালের এই বন্যায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। সংকট তৈরী হয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানিসহ বিভিন্ন জিনিসের। এই অঞ্চলের মানুষ এখন জীবন ও জীবিকার সমস্যার মুখে পড়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য সাহায্যে সরকারের দার্য়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, সরকার ভয়াবহ বন্যা, প্রলয়ংকারী বন্যা ও মানুষের ভাসমান লা/শসহ মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকার যথাযথ গুরুত্ব না দিয়ে বরং পদ্মা সেতু উদ্বোধনের নামে অনাড়ম্বর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের বিপরীতে ‘জমকালো’ ও ‘বিলাসবহুল’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।গণমাধ্যমে খবর আসছে, নদীর স্রোতে ভাসছে হতভাগ্য মানুষের লা/শ। হাওরে কারো লা/শ, আবার খালের পানিতে কারো লা/শ। দাফনের জন্য মাটি মিলছে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
আ স ম রব বলেন, সরকার মৃ/ত বা নিখোঁজের সংখ্যা জানাতে পারেনি। সিলেট অঞ্চলে বন্যার ভয়াবহতা কল্পনাতীত। প্লাবিত হচ্ছে হবিগঞ্জসহ নতুন নতুন এলাকা। ববন্যা কবলিত এলাকার মানুষ এখন দিশেহারা। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে। ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানী অভাবে বানভাসিরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা ত্রাণ পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, ত্রাণের জন্য হাহাকার। নিরাপদ পানির তীব্র অভাব। নলকূপটি ডুবে যাওয়ায় নিরাপদ পানি পান করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী রোগ। সর্বোপরি বন্যা পরিস্থিতি এখন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সময়মতো বন্যার পূর্বাভাস এবং সতর্কতা সত্ত্বেও সরকার হতাহতের সংখ্যা কমাতে বা দুর্যোগ মোকাবেলায় কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অভাবে লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
সরকারের সমালোচনা করে জাসদ সভাপতি বলেন, বন্যার ভয়াবহতা বাড়াতে হাওর এলাকায় অবকাঠামোর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে সরকার আগ্রহী নয়। এই ভয়াবহ সংকট মোকাবেলায় সরকারের ভূমিকা খুবই হতাশাজনক। ভয়াবহ বন্যার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খুবই অপ্রতুল। জনগণের ভয়াবহ বিপদে সরকার তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। সরকার দৃশ্যমান স্থাপনা নির্মাণেই উৎসাহী জনজীবন সুরক্ষার চেয়ে, এটাই সরকারের উন্নয়ন দর্শন। এখন জাতির জন্য দুর্যোগের সময়। ভয়াবহ বন্যায় জনগণের মনে যখন জাতীয় শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে, তখন ‘আড়ম্বরপূর্ণ’ ও ‘বিলাসী’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা মোটেও সঙ্গত নয়।
প্রসঙ্গত, সরকার বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে না দাড়িয়ে উৎসব করছে। বন্যায় মানুষ খাদ্যের অভাবে হাহাকার করছে কিন্তু সরকারের সে বিষয়ে তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন জেএসডি সভাপতি আ স ম রব।