রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, আমাকে রানী খুব ভালোবাসতেন। আমিও সবসময় তাকে শ্রদ্ধা করতাম মায়ের মত দেখতাম। আমি যদি একটু চোখের আড়াল হতাম সেতো রানী বলতেন হাসিনা কই হাসিনাকে তো দেখছি না।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে প্রয়াত রানীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেসে যান। শেখ হাসিনা ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেস হলে প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এর আগে ব্রিটিশ স্পিকারের প্রতিনিধিদল ওয়েস্টমিনস্টারে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোনকে স্বাগত জানান। পরে তাদের ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে একটি শোক বই খোলা হয়েছিল। সেখানে শেখ হাসিনা বাংলায় শোকবার্তা লেখেন। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ, আমার পরিবার এবং আমার ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে আমার গভীর সমবেদনা।’ এরপর প্রধানমন্ত্রীকে অন্য কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি টেলিভিশনের সামনে রানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিকি ফোর্ড তাকে ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে স্বাগত জানান। সেখানে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে তিনি প্রয়াত রানীর সঙ্গে আট-নয়বার সাক্ষাত করেছেন এবং রানি তাকে নামেই চিনতেন। তিনি (রাণী) আমার কাছে একজন মাতার ব্যক্তিত্ব ছিলেন, তিনি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন। আমি আমার মায়ের মতো একজনকে হারিয়েছি। মনে হয় একজন অভিভাবক চলে গেছে।
সৈয়দা মুনা তাসনিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা উভয়েই ১৯৬১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) সফরকালে রানীর সঙ্গে দেখা করেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, প্রয়াত রানী ছিলেন একজন বিশ্ব অভিভাবকের মতো এবং তার মৃত্যুতে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, শেখ রেহানা- যিনি নিজেও একজন ব্রিটিশ নাগরিক, শোক বইয়ে লিখেছেন- ‘তিনি আমাদের হৃদয়ের রানী এবং থাকবেন।
উল্লেখ্য, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কে নিমন্ত্রণ করা হয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। অনেক ব্যস্ততার কারণে ওই সময়ে বর্তমান রাজা চার্লস তাকে স্বাগত জানাতে পারেনা। পরে রাজা চার্লস শেখ হাসিনার উপস্থিতির কথা জানতে পেরে ফোন কলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।