বিতর্কিত এবং অশালীন বক্তব্য দেওয়ার কারণে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ডা. মুরাদ হাসান। তিনি নিজেকে আড়াল করতে কানাডায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কানাডায় বসবাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা বলছেন, কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ এই ধরনের একজনকে দেশটিতে প্রবেশ করার অনুমতি না দিয়ে সঠিক কাজ করেছে। বিদেশের নিকট দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য তার শাস্তিও দাবি করেছেন তাদের মধ্যে অনেকে।
বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন মুরাদ হাসান। কানাডায় প্রবেশে তাকে বাধা দেওয়া নতুনভাবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার কানাডার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে টরেন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দরে পৌঁছান ড. মুরাদ হাসান। এরপর কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি সিবিএস কর্মকর্তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় মুরাদ হাসান কানাডায় ডায়াবেটিকসসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এসেছেন বলে জানান।
তার উত্তর সিবিএস কর্মকর্তাদের কাছে অবান্তর ঠেকলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে শুক্রবার রাতে দেশের উদ্দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এমনকি তিনি যাতে ভবিষ্যতে কানাডায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তার আঙ্গুল ও হাতের ছাপ, ছবি এবং স্বাক্ষর সংগ্রহ করে রাখে ইমিগ্রেসন কর্তৃপক্ষ।
এমন খবরের পরপরই দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছেন মুরাদ। অনেকে কানাডা কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
এর আগে ড. মুরাদ হাসানের কানাডায় আসা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে। কানাডায় তার প্রবেশ প্রতিহত করতে দেশটির বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, ইমিগ্রেসন অফিস এবং কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কাছে লিখিত আবেদন দাখিলের পাশাপাশি বাংলাদেশে তার অপকর্মের সংবাদ ভিডিও ও অডিও সরবরাহ করেন তারা।
এদিকে ডা. মুরাদকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং কানাডায় যাওয়ার পরও বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনার পর অনেকেই মনে করছেন, কানাডায় বাংলাদেশের সরকারি আমলা ও এমপিদের দেশটিতে প্রবেশের বিষয়টি ভবিষ্যতে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ডা. মুরাদ হাসান গত ৭ ডিসেম্বর নিজের ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। গত ৯ ডিসেম্বর রাতে তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্টের মাধ্যমে কানাডায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, ডা. মুরাদ হাসান বর্তমান সময়ে একটি আলোচিত নাম যিনি নারীদের প্রতি অশোভন বক্তব্য দেওয়া ও একজন অভিনেত্রীর সাথে ফোনালাপের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ড. প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।