দীর্ঘদিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।
এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কে নির্বাচনে অংশ নেবে আর কে নেবে না- চিন্তার কিছু নেই, ফুল ফুটতে শুরু করেছে, আরও ফুল ফুটবে। ফুটবে শত শত ফুল।
এই ভাষণের কয়েকদিন পর গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়ে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করছেন বলে গুঞ্জন ওঠে। এছাড়া কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরদিনই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। এতে আবারও আলোচনায় এসেছে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের একটি টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে উপস্থাপক ব্যারিস্টার রুমিনকে প্রশ্ন করেন ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য সত্য কিনা?
জবাবে রুমিন ফারহানা বলেন, ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতার (সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান) নাম বলেছেন, বিএনপি নেতা নিজেই বলেছেন- কে বা কারা আমার নামে মনোনয়ন নিয়েছিল। আমি কিছুই জানি না। পরিবর্তে তিনি ইসিকে চিঠিও দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন- আমার নামে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমাকে জানানো হলো না কেন? এ বিষয়ে তিনি জবাবও চেয়েছেন। বিষয়টি এড়িয়ে যায় ইসি। এখনো কোনো উত্তর নেই।
এ ছাড়া বিএনপির এই নেতা সাফ জানিয়ে দেন- আমি কোনো মনোনয়ন নিইনি।
পরে উপস্থাপকের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার রুমিনকে প্রশ্ন করা হয় জামিনের পর মনোনয়নপত্র কেনার গুঞ্জন কেন? আপনার প্রশ্নের উত্তরটি সুন্দরভাবে লুকিয়ে আছে, বলেছেন রুমিন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের সদস্যদের খুঁজতে মাঠে নেমেছে। এমনকি তাদের অবস্থা এতটাই দেউলিয়া যে আওয়ামী লীগ তাদের নিজ দলের প্রার্থীদের বিদ্রোহ করতে উৎসাহিত করছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন বা কারাগার নাকি মনোনয়ন বেছে নিতে বলা হয়?
ব্যারিস্টার রুমিনকে উপস্থাপক আবারও প্রশ্ন করেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাকে যদি দল ছাড়ার ভয় দেখানো যায়, তাহলে ব্যাপারটা কীভাবে গড়াল?
জবাবে রুমিন ফারহানা উপস্থাপককে বলেন, এটা সহজ মনে করেন? কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪৪ ,০০০ হলেও এক মিলিয়নেরও বেশি বন্দী রয়েছে। যখন বিএপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করা হয়। মানুষের ন্যূনতম মর্যাদা নেই। শীতে কম্বলও নেই। কোন চাদর নেই। এমনকি কাপড়ের টুকরো নিতেও দেওয়া হয়নি। ওই কারাগারে ঢোকার আগে তাকে থানায় আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করা হয়। সব শ্রমিকের ধৈর্য সমান নয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (তৃতীয় আদালত) বিচারক রকিবুল হাসান সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে জামিনের তিন ঘণ্টার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে নির্বাচনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে একরামের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন এক ব্যক্তি।