স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে শেষমেষ সোশ্যাল মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিজেই নিজের জীবনকে শেষ করে দিলেন সৌদি প্রবাসী সবুজ সরকার। জানা যায়, এর আগেই এ ঘটনায় স্ত্রীকে ক্ষমা করে দেয়ার পরও সঠিক পথে ফেরাতে না পেরে গত মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) সৌদিতে থাকা অবস্থায় গলায় দড়ি দেন তিনি। এ ঘটনায় রীতিমতো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন সবুজের পরিবার।
নিহত সবুজ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার টনকী ইউনিয়নের মাজুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে।
নিহতের আত্মীয় সূত্রে জানা যায়, সবুজ এক সময় গাড়িচালক ছিলেন। সেই সুবাদে পার্শ্ববর্তী বাইড়া গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে পাঁচ বছর আগে সবুজ নিজ জন্মভূমি ছেড়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমান।
সৌদিআরবে অবস্থানরত আট মাসের দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উক্ত প্রেমিকার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর্যন্ত বেশ ভালো ছিল সবুজ ও তার স্ত্রীর সম্পর্ক। এরই মধ্যে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। এমনকি কয়েকবার সে বাড়ি থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন।
বিষয়টি জানার পরও সবুজ তাকে ক্ষমা করে দিয়ে সংসার করতে রাজি হন। কিছুদিন আগে ওই উপজেলার ত্রিশ গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান তার স্ত্রী। বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি সবুজ। যে কারণে মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেন সৌদি রেমিটেন্স যোদ্ধা সবুজ।
জানা যায়, স্ত্রীর এ বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বেশকিছু দিন ধরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন সবুজ। কোনো কিছুতেই মন বসছিল না তার। আর এরই মধ্যে কোনো উপায় না পেয়ে নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট ফেসবুক লাইভে এসে গলাউ দড়ি দিয়ে বসেন তিনি। তবে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেই ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন সবুজ। সেখানে তিনি লেখেন— কষ্ট আর মানতে পারি না, এই দুনিয়াতে শুধু কষ্ট নিয়ে আসলাম।
ওই স্ট্যাটাসের একটি কমেন্টে তিনি লেখেন, একটি মেয়ে আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে।
এদিকে সবুজের মৃত্যুর খবরে পরিবার-স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া। অকালেই তাকে হারাতে হবে, এমনটা ভাবতে পারেননি কেউ।