বিষয়টি অনেকটা অবাক করা হলেও বাস্তবেই এবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের গোসিঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিয়ের পর কনে’কে তুলে নেয়ার অনুষ্ঠানে বর পক্ষ তাদের দেওয়া কথামতো স্বর্ণালঙ্কার না দেওয়ার পাশাপাশি ৬০ জনের কথা বলে প্রায় ১২০ জন বরযাত্রী আনায় একপর্যায়ে হট্রগোল শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে। আর এরই ধারবাহিকতায় সংঘের্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন- আলামিন হোসেন, শাহনাজ আক্তার, রফিকুল ইসলাম, আরিফ হোসেনসহ আরও দুজনের।
বরের পক্ষের লোকজন দাবি করেন, কনের বাড়ির লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। দরজা বন্ধ করে মারধর করা হয়। প্রাণ বাঁচিয়ে বরকে নিয়ে পালিয়েছে তারা।
কনের বাবা তোতা মিয়া দাবি করেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের সাঈদ ফকিরের ছেলে রাকিব ফকিরের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে এবং কনে স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেছে। বিয়ের পর, উভয় পরিবারের সম্মতিতে, শুক্রবার কনেকে তুলে নেওয়ার কথা ছিল এবং বরের পক্ষ থেকে ৬০ জন অতিথি আসার কথা ছিল। তারা ৬০ এর পরিবর্তে ১২০ জন অতিথিকে নিয়ে আসে। দুপুরের খাবারের পরে, বরের আত্মীয়রা একটি ছোট সোনার চেইন দিয়ে কনেকে সাজাতে বাড়িতে যায়।
তিনি দাবি করেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে না আসায় দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে উভয় পক্ষের ছয়জন আহত হয়। এ সময় বর পক্ষের সঙ্গে আসা অতিথিরা ঘরের আসবাবপত্র, চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে।
কনের বাবা আরও দাবি করেন, তিন দিন আগে উভয় পক্ষের সম্মতিতে তিন লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে তাদের বিয়ে হয়। শুক্রবার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বরের পক্ষের। ওয়াসিলকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তারা একটি ছোট চেইন নিয়ে আসে। বরপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মেয়েকে না নিয়ে ঝগড়া করেছে।
বরের বাবা সাঈদ ফকির বলেন, “শুক্রবার আমি আমার আত্মীয়সহ ছেলেকে আনতে গিয়েছিলাম। ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার না নেওয়ায় কনে পক্ষ কনে দিতে অস্বীকার করে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয়। বরের সাথে থাকা মহিলারা তাদের আত্মীয়দের উপর হামলা করে আহত করে এবং তাদের কানের দুল, নাকের ফুল, গলার চেইনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। কনে পক্ষ অতিথিদের মারধর করে আহত করে।”
তারা কনে না নিয়েই শ্রীপুর এসে বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বর ও কোন পক্ষ থানায় হাজির হয়ে পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের এ অভিযোগের আলোকে তদন্ত চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।