সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বেশকিছু সময়ের জন্য লোডশেডিং দেখা দিয়েছে জিতের কারণ হিসেবে যেটার কারণ হিসেবে জ্বালানি তেলের সাশ্রয় এর বিষয়টিকে চিন্তা করা হচ্ছে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে এদিকে জ্বালানি তেলের সংকট বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হয়েছে যার প্রভাব বাংলাদেশের উপরে পড়েছে। জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লোডশেডিং এর বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চালুর কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কিছু সময়ের জন্য (প্রতিদিন) বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে বলবো, যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানি সাশ্রয় করা যায়।
উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশবাসী প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং প্রত্যক্ষ করেছে। উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আমরা একটা সুনির্দিষ্ট সময় যদি ধরে দেই যে একেক এলাকাভিত্তিক কিছুক্ষণের জন্য সেখানে বিদ্যুতের কিছুটা লোড শেডিং হবে, হঠাৎ যাবে হঠাৎ আসবে না, এতে মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারবে।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ঢাকা সে”নানি’বাসে পিজিআর সদর দফতরে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল কর্মসূচিতে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে এবং সবাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। রাশিয়া ও ই’উক্রেনের মধ্যে সৃষ্ট সং”ঘাতের কারণে তেল, ডিজেল, ভোজ্যতেল ও সারের দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সব কিছুর দাম বেড়েছে। শুধু তাই নয়, বেড়েছে চালানের ভাড়াও। যেটা হয়তো ৮০০ কোটি টাকায় পেতাম সেটা এখন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার কোটির বেশি লেগে যাচ্ছে। আমরা এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করতাম, তার দাম বেড়ে গেছে।
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিদ্যুতে বড় ধরনের ভর্তুকি দিতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে খরচ আমাদের আছে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সেই খরচ গ্রাহকের কাছ থেকে নিতে পারছি না। কিন্তু আমরা কত ভর্তুকি দেব? যেখানে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে। তাই আমি আপনাকে বিদ্যুতের খরচ বাঁচাতে অনুরোধ করবো, সীমিত রাখুন। তাতে আপনারও লাভ হবে। আপনার বিলও কম উঠবে।
অনেক উন্নত দেশে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমি ও জলাশয়কে কাজে লাগিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। তাই এটি সব ক্ষেত্রেই সাশ্রয়ী হতে হবে। আমরা এখনই কিছু পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে তার থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারনো না।
ফোর্সেস গোল ২০৩০ অনুসরণ করে সশ”স্ত্র বাহি’/নীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও সঙ্গে সং”ঘাতে জড়াবো না, আমরা শান্তি চাই। এ ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতি মেনে চলি। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সংগঠন গড়ে তুলতে। আমরা সে জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি এবং বাস্তবায়ন করেছি।
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। যারা আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে এবং আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের, মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সচিবদের বা বাংলাদেশকে অসম্মান করতে চেয়েছে তাদের আমরা জবাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অনন্য জাতীয়তার বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে অনেক দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে। সেদিক থেকে বাংলাদেশ তেমন কোনো অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েনি। তবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের সংকট সৃষ্টির প্রভাব দেশে পড়ায় জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ের দিকে মনোনিবেশ করছে সরকার। তাই লোডশেডিংয়ের পরিমাণ এলাকাভিত্তিক বাড়ানোর চিন্তা নিয়েছে সরকার।