বিএনপি সারাদেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করার পর রাজধানীর গোলাপবাগে বড় ধরনের সমাবেশ করে। আর এই সমাবেশের আগে বিএনপির নয়া পল্টনের কার্যালয়ে পুলিশ অভিযান চালায় এবং নেতাকর্মীদের সাথে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এদিকে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের অপর এক শীর্ষ নেতা মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ কিন্তু এরপরও সমাবেশ সফল হবে সম্পন্ন করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণমিছিল শুরু করবে বিএনপি। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ ঘোষণা দেন।
৭ ডিসেম্বরের ঘটনার পর প্রথমবারের মতো নয়াপল্টন কার্যালয়ে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এসময় তারা কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারের চরিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরাই ১০ তারিখের সমাবেশের লক্ষ্য ছিল। বিরোধী দল সরকারের একটি অংশ, করে দিলে রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকতে পারে না এবং নেইও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের নির্দেশে তাদের দলের (আওয়ামী লীগ) কর্মীরা ১০ তারিখের দিকে কোনো অপকর্ম করেনি। সরকার আত”ঙ্ক সৃষ্টি করলেও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে বিএনপি। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করব এবং এই সরকারকে বিদায় জানাব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজরা বিএনপি কার্যালয়ে নজিরবিহীন ব”র্বর/তা চালিয়েছে। ফাইল ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, টাকা লু”ট, সব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ভাং’চু/র, এমনকি জিয়াউর রহমানের ম্যুরালও ভেঙে ফেলা হয়। ৭ তারিখে পুলিশ আচ”মকা হা”/মলা চালায়। যেভাবে হা”/মলা চালানো হয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নেই। দলীয় কার্যালয় থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেফ’তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে। এসব গ্রেফতারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বন্ধ করা। বিএনপি একটি মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল হিসেবে তাদের কর্মসূচি পালন করেছে।
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি জমায়েতে বাধা দিয়েছে। সরকারকে কোন ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটাতে হবে তা আমাদের হিসেবে মেলে না। তাদের মতো খেললেও বিএনপি এই খেলায় বিশ্বাস করে না। জনগণ ক্ষু”ব্ধ, জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। জনগণ আর এই সরকার চায় না। ৭ই ডিসেম্বরের আচরণ প্রমাণ করেছে যে এই সরকার গায়ের জোরের সরকার। আমি ১০ দফা দিয়েছি। যারা এই ১০ দফার সমর্থনে একযোগে আন্দোলন করবে তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করবে বিএনপি।
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, গতকাল অফিসে আসতে পেরেছি, যা খোয়া গেছে তার তালিকা করছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেব কী করবো। ১০ ডিসেম্বর যে সমাবেশ হয়েছে সেটা আমার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিল। সরকার নিজেদেরকে যদি এ বিষয়টিকে ব্যর্থ হিসেবে ধরে নেয়, তাহলে সে বিষয়ে আমাদের বলার কিছু নাই। সরকার বর্তমান সময়ে এসে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কারণ তারা যা করেছে এবং কি করবে বা কি বলবে এটা নিয়ে ভেবে পাচ্ছেনা। আর এই বিষয়টাকে আমরা ভ্রুক্ষেপও করি না। দেশের সকল মানুষ জানে ক্ষমতাসীন সরকার যে প্রতিশ্রুতি দেয় সেটা কখনো পালন করে না।