‘কন্ট্রাক্ট কিলারের’ সঙ্গে যে কথা হয়েছিলো ব্যারিস্টার সুমনের (ভিডিওসহ)

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সৈয়দুল হক সুমন হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার চার দিন পরও রহস্যের জট খোলেনি। এ রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব পুলিশের বলে মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার সুমন। তবে বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের পাশাপাশি হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে।

গত শনিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি দাবি করেন, চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, তাকে হত্যার জন্য চার-পাঁচজনের অজ্ঞাতনামা একটি দল মাঠে নেমেছে। এ অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ব্যারিস্টার সুমন মঙ্গলবার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে অনেকবার পড়েছেন, তবে এবারের ব্যাপারটা ভিন্ন।আমার থানার ওসি যখন আমাকে ঘটনাটি জানান এবং এ তথ্য প্রদানকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেন, তখনই আমি একটি সাধারণ ডায়েরি করি। আমার মৃত্যুর পর শোক প্রস্তাবের চেয়ে আমি জীবিত থাকা অবস্থায় নিশ্চিত হওয়া দরকার কেন আমাকে হত্যা করা হবে।

চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, গত ২৮ জুন রাতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তার কাছে ব্যারিস্টার সুমনের ফোন নম্বর চায়। এমপির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ওই ব্যক্তিকে ফোন নম্বর দেননি ওসি। কিছুক্ষণ পরে, ব্যক্তিটি হোয়াটসঅ্যাপে দুটি ছোট বার্তা পাঠায় এবং পরে সেগুলি মুছে ফেলে।একটি বার্তায় লেখা ছিল, ব্যারিস্টার সুমনের কিছু শত্রু আছে, যারা তার ক্ষতি করতে পারে।

গত ২৯ জুন চুনারুঘাটে ব্যারিস্টার সুমনের বাড়িতে গিয়ে তাকে বিষয়টি জানান ওসি। এরপর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে প্রায় ১০ থেকে ১২ মিনিট কথা হয়।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ওই ব্যক্তি বলেন, আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে কন্ট্রাক্ট কিলারদের কয়েকজন সদস্য। এর পেছনে দেশের কিছু বড় লোক জড়িত। কন্ট্রাক্ট কিলারদের মধ্যে ওই ব্যক্তিও ছিলেন। যখন সে আমার নাম শুনতে পায়, তখনই কন্ট্রাক্ট কিলিং থেকে সরে আসে। কারণ ওই ব্যক্তি আমাকে পছন্দ করে ও আমার একজন ভক্ত। পাশাপাশি সে একজন সিলেটি।

ব্যারিস্টার সুমন মনে করেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। দুর্নীতিবাজদের নিয়ে সংসদে কথা বলেছেন, এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের সামনেও কথা বলেছেন। এখন কারা তার ওপর ক্ষুব্ধ, এ বিষয়টি তার পক্ষে চিহ্নিত করা কঠিন।


আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না বিএনপি-জামায়াতের ২ নেতার

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সড়ক দুর্ঘটনায় জামাল উদ্দিন গাজী (৫৫) ও হাফিজ উল্লাহ (৫৭) নামে দুই বিএনপি-জামায়াত নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সুলতান নগর এলাকার চরজব্বার থেকে সোনাপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জামাল উদ্দিন গাজী উপজেলার চর আমান উল্যা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাটাবুনিয়া গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে এবং একই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। মাওলানা হাফিজ উল্লাহ উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মৃত মাওলানা নুরুল উল্লাহর ছেলে এবং একই ইউনিয়নের জামায়াত নেতা ছিলেন।

চর আমান উল্যা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হোসেন আহমেদ দুলাল জানান, সকালে বিএনপি নেতা গাজী তার আত্মীয় জামায়াত নেতা হাফিজ উল্যাকে নিয়ে একটি রাজনৈতিক মামলায় অংশ নিতে মোটরসাইকেলে জেলা শহর মাইজদীতে যান। হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার চরজব্বার থেকে সোনাপুর সড়কের সুলতান নগর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি বেপরোয়া দ্রুতগামী সিএনজি অটোরিকশা তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়।

এতে মোটরসাইকেল চালক হাফিজ উল্লাহ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে রাস্তার বাইরে ছিটকে পড়েন। এ সময় পেছনে থাকা আরেকটি ট্রাকও তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বিএনপি নেতা গাজী। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গাজীকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টায় জামায়াত নেতা হাফিজ উল্লাহ মারা যান।

চরজব্বার থানার ওসি কাউছার আলম ভূঁইয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।