সন্তান হওয়ার আগে অনেকে তার স্ত্রীকে তার মায়ের বাড়িতে রেখে আসে। কামাল ও তার মধ্যে একজন। যেহেতু তার স্ত্রী অসুস্থ এবং সে তার মায়ের বাড়ি রয়েছে তাই প্রায় সময়ই কামাল তার শ্বশুর বাড়িতে যাতায়াত করতো। তবে তার সাথে এমন ঘটনা ঘটবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
কত প্রস্তুতি, কত আয়োজন, কত স্বপ্ন ছিল কাল দেখবে অনাগত প্রথম সন্তানের মুখ। কিন্তু সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় একটি ঘাতক ড্রামট্রাক এবং একটি অটোরিকশার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে।
বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে শ্রীপুর-বারমীর বড়মা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ড্রাম ট্রাক ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ জনের একজন আবুল কালাম আজাদ। উপজেলার বারমি ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়ক। নিহত আবুল কালাম আজাদ (২৫) তেলিহাটি ইউনিয়নের ডুম্বরিচালা গ্রামের নুরুজ্জামান বেপারীর ছেলে।
প্রায় ৩ বছর আগে বিয়ে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) গর্ভবতী স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে প্রসব হওয়ার কথা ছিল। এমতাবস্থায় স্ত্রী তার শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। তাই তিনি বার্মার তাতি সুতায় তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর খোঁজ খবর নেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
পরে শ্বশুর বাড়ি থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন আবুল কালাম। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহে নেওয়া হলে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে বিকেল ৪টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অপর নিহত হানিফ মৃধা (৫০) মৃধা বাড়ি, মধ্যপাড়া, বারমীর মৃত নবী মৃধার ছেলে। তিনি একজন ফলের ব্যবসায়ী।
নিহত হানিফ মৃধার শ্যালিকা মুহিবুল্লাহ জানান, চাচা বারমি বাজারের পুরনো ফলের ব্যবসায়ী ছিলেন। অন্যান্য দিনের মতো আজ সকালেও তিনি মোকাম থেকে ফল কিনতে দোকানে যাচ্ছিলেন। হানিফ মৃধা স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘাতক ড্রাম ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় ওই ট্রাক ড্রাইভারের দোষ দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ট্রাকটি জব্দ করা হলেও ওই অভিযুক্ত ড্রাইভারকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।