বিএনপি বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপির শীর্ষ নেতারা আগামী ১০ ডিসেম্বর বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বিশাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে সংসদ থেকে বিএনপি সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দলটির শীর্ষ নেতারা।
আন্দোলন চূড়ান্ত হলে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসব সমাবেশের মধ্য দিয়ে জনগণের অভ্যুত্থান হবে।
গতকাল (১১ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইসলামী ঐক্যজোট ও ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
দশটি সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের বিষয়টি তুলে ধরে ফখরুল আরও বলেন, জনগণ বেরিয়ে আসবে। তাদের নিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো। ২০ দলীয় জোটের এই দুই দলের সঙ্গে পৃথক সংলাপ করেছেন বিএনপি নেতারা।
নজরুল ইসলাম খান বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। বিকাল ৪টা থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে এক ঘণ্টাব্যাপী সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিবের নেতৃত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান, যুগ্ম সম্পাদক সামছুল হক, কামরুজ্জামান রোকন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ান আনসারী, নরসিংদী জেলা সভাপতি নাসির উদ্দিন, কুমিল্লা জেলা সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস রেজা, মো. সদস্য আব্দুল কাদির ও মজিবুর রহমান।
এরপর বিকেল ৫টায় ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির নেতৃত্বে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহতাজ আহসান, প্রচার সম্পাদক কাওসার আলী, তথ্য গবেষণা সম্পাদক ইয়াহিয়া মুন্না ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আল আমিন অংশগ্রহণ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র হর’নকারী ও মানবাধিকার লঙ্ঘ”নকারী লু”টেরা সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা বেশ কিছু দিন ধরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছি। আমি ইতিমধ্যে এক দফা আলোচনা শেষ করেছি। দ্বিতীয় দফায় এখন মূল দাবিগুলো নিয়ে কথা বলছি। ইতোমধ্যে ১১টি দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে।
ডেমোক্রেটিক লীগ ও ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে আলোচনায় মূল দাবি গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারিক রহমানসহ রাজনৈতিক কারণে সাড়ে তিন লাখ মানুষের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার। এই অনির্বাচিত সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।
“সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং ক্ষমতা একটি নির্বাচনী নিরপেক্ষ সরকার বা একটি দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।”
সেই নিরপেক্ষ সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংসদ, নতুন সরকার গঠিত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা করেছি।
তিনি আরো যোগ করে বলেন, আমরা এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে ঐক্যমত্য পৌঁছেছি এবং এই সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাব। এই স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। আন্দোলনে নির্দিষ্ট কোন দফা থাকবে না। সকল দলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দফার বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।