দেশের প্রধানতম পর্যটন স্থান কক্সবাজার সাম্প্রতিক সময়ে নানা ধরনের অপকর্মের ঘটনা ঘটছে। ফের এই পর্যটন কেন্দ্রে এক পর্যটক গৃহবধূর সাথে গর্হিত কাজ করার ঘটনা ঘটেছে যেটা নিয়ে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এই দু:খজনক ঘটনার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কক্সবাজারে পর্যটকদের ব্যাপক ঢল ঠেকানোর জন্য এটা কোনো মহলের পরিকল্পিত কোনো ধরনের কারসাজি কিনা সেটা খুঁজে বের করার দাবি সচেতন মহলের।
গতকাল কক্সবাজার সৈকত এলাকায় এক পর্যটক গৃহবধূর সাথে গর্হিত কাজের ঘটনার পর দেশজুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এরপর কক্সবাজারের পর্যটকদের মধ্যে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। এই ঘটনা ঘটার পরে ঘটনার শিকার ঐ মহিলা দাবি করেছেন, দেশের জরূরী সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন করার পরও পুলিশ কোনো ধরনের সহায়তা করতে এগিয়ে আসেনি। এরপর ঘটনাটি র্যাবকে জানালে র্যাব তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে।
ওই পর্যটক গৃহবধূর ভাষ্যমতে ৩ বখাটে যুবক মিলে কক্সবাজার শহরের লাবণী পয়েন্ট থেকে তুলে নিয়ে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ও হ’/ত্যার ভ’য় দেখিয়ে দুবার সংঘবদ্ধভাবে খারাপ কাজ করে ওই গৃহবধূ। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামের হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করে র্যাব-১৫।
ঘটনাস্থল হোটেল জিয়া গেস্টইনের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় নাকি ওই আশিক ছেলেটার সাথে একটি মহিলার স্বামী পরিচয় দিয়ে ওই হোটেলে উঠেছিল। আর রাতে তাকে খারাপ কাজ করা হয়েছে বলে ঘটনা প্রচার করায় বিষয়টি পুলিশের কাছেও স’ন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে।
এবিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেল জিয়া গেষ্টইন এর ম্যানেজার ছোটনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে ব্যস্ততম বিনোদন কেন্দ্র লাবণী পয়েন্টে টুরিস্ট পুলিশের সার্বক্ষণিক তদারকি রয়েছে। সেখানে এরকম একটি ঘটনা ঘটার বিষয়টি যেমন টুরিস্ট পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অন্যদিকে কক্সবাজারে ব্যাপক পর্যটক ঠেকাতে কোন মহল থেকে এটি পরিকল্পিত কোন ষড়য’ন্ত্র কিনা তাও প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দাবী উঠেছে সচেতন মহল থেকে।
ভুক্তভো’গী ওই নারী অভিযোগ করে জানান, ‘বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে এসে শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে উঠেন তারা। সেখান থেকে বিকালে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ঘুরতে বের হলে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে।
পরে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়।
এ সময় ৩ যুবক ওই গৃহবধূকে অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। ঐ তিনজন তাকে ট্যুরিস্ট গলফ কোর্সের পিছনে একটি চায়ের দোকানের পিছনে একটি ঝুপড়িতে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করে। সেখান থেকে ঐ নারীকে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরেকবার তাকে গণভাবে গর্হিত কাজ করে যুবকরা। ঘটনাটি কাউকে জানালে তার সন্তান ও স্বামীকে হ’/ত্যা করা হবে বলে তারা ঘর বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ওই গৃহবধূ এই ঘটনার বিষয়ে আরও জানান, জিয়া গেস্ট ইনের ৩য় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের হেল্প রুমের দরজা খুলে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। পুলিশ সেই সময়ে তাকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসেনি বরং সেই সময় পুলিশ তাকে যে পরামর্শ দেয় তাতে অনেকটা হতবাক হয়ে যান ঐ নারী এবং তার স্বামী। তাদের থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়া হয়। তারা কোনো ধরনের সহয়তা না পেয়ে র্যাবের নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দেয়, সেই সময় র্যাব এসে তাকে উদ্ধার করে।