সম্প্রতি সময়ে কক্সবাজারে পর্যটকদের বিভিন্নভাবে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে প্রায় সময়ই। বেশ কয়েকটি ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনাও ঘটেছে কক্সবাজারে। সম্প্রতি কয়েক দিন আগে স্বামী সন্তানকে জিম্মি করে রেখে একজন মহিলাকে ধর্ষণের মতো ঘটনাও দেখা গেছে ঘোটতে। এমন ঘটনা ঘটার পরে কক্সবাজারের প্রশাসন এবার একটু নাড়া চাড়া দিয়ে উঠে বসেছে। সাতটি নির্দেশনামা জারি করা হয়েছে পর্যটকদের উদ্দেশ্যে তাদের নিরাপত্তার জন্য।
কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের আবাসিক হোটেলে রুম বুক দেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন ও দাখিল করতে হবে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান বৃদ্ধির জন্য নেওয়া হয়েছে আরও গুরুত্বপূর্ণ ৬টি সিদ্ধান্ত।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
এর আগে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার জেলায় ভ্রমণকারী পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, সহসভাপতি মো. রেজাউল করিম, প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহেরসহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সার্বিক আলোচনা শেষে ৭টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা হল-
সকল আবাসিক হোটেলে রুম বুক দেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন ও দাখিল করতে হবে। আবাসিক হোটেল সমূহে অনুসরণীয় একটি অভিন্ন আদর্শ কর্মপদ্ধতি (এসওপি) প্রণয়ন করা হবে। প্রতিটি হোটেলে কক্ষ সংখ্যা, মূল্য তালিকা ও খালি কক্ষের সংখ্যা সম্বলিত ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করতে হবে। পর্যটকদের সুবিধার্থে ডলফিন মোড়ে সুবিধাজনক স্থানে একটি তথ্যকেন্দ্র ও হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে। প্রতিটি আবাসিক হোটেলে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু/জোরদার করতে হবে। হোটেল-মোটেল জোনে অবৈধ পার্কিং এবং সমাজবিরোধীদের কর্মকাণ্ড বন্ধে অভিযান জোরদার করা হবে। এবং জেলা প্রশাসনের সহায়তায় তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে হোটেল মোটেল মালিক সমিতি।
একের পর এক নেক্কারজনক ঘটনা যেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কে কলুষিত করে তুলেছে। এবার যে সাতটি নির্দেশনা পর্যটকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে আশা করা যায় এটা মেনে চললে দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। তবে এখন দেখার বিষয় প্রশাসন কতটুকু তৎপরতার সাথে নির্দেশনাগুলো কত দ্রুত কার্যকর করতে পারে। শুধু তাই নয় পর্যটকরা প্রশাসনের দেওয়ার নির্দেশনা কতটুকু মানে সেটাও দেখার বিষয়।