পুলিশের মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। শুধু পুলিশ নয়, ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ নিজেই ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা বর্ণনা করে আনোয়ার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক তার এলাকার বড় ভাই। তাদের বাড়ি গাজীপুরে। আজিজুল শনিবার সন্ধ্যায় তাকে ফোন করে ঢাকার শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যেতে বলেন। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে যান। বড় ভাই বারডেম জেনারেল হাসপাতালে আছেন জেনে সেখানে ছুটে যাই। হাসপাতালের চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখি রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদের মধ্যে তর্কাতর্কি চলছে। আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও দুই নেতা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই ছাত্রলীগ নেতার কথায়, ঘটনার একপর্যায়ে এডিসি হারুন শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত)কে ফোন করে হাসপাতালে ডেকে নেন। আজিজুল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমানকে পুলিশ গিয়ে মারধর করে। পরে পুলিশ হাসপাতাল থেকে একটি গাড়িতে করে আজিজুলসহ তিন-চারজনকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনারকে (মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন) ফোনে মারধরের বিষয়টি জানিয়ে শাহবাগ থানায় যাই। গিয়ে দেখি ওসি তদন্ত কক্ষে সবাইকে আটকে রেখে মারধর করা হচ্ছে। এডিসি হারুন ও ওসিকেও মারধর করছেন। দরজা খুলে ওসির কক্ষে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন আমার ওপর হামলা চালায়। আমার মুখে ঘুষি মেরেছে। একপর্যায়ে তিনি আমাকে নিচে ফেলে দিয়ে লাথি মারেন। হারুন তার পিস্তলের বাট দিয়ে আমার মুখ থেঁতলে দিল, আমার দাঁত ভেঙ্গে দিল।
জানা গেছে, বিসিএস ৩৩ ব্যাচের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের (এডিসি) চিকিৎসার জন্য শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে আসছিলেন। সেখানে পুলিশের ৩১ ব্যাচের এডিসি হারুনও আসেন। হাসপাতালের চার তলায় তারা কথা বলেন। ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী ও সভাপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক ছাত্রলীগের নেতাদের ডেকে পাঠান। হাসপাতালের ভেতরে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে হারুন ওয়ারলেস করে পুলিশ ফোর্স ডেকে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কক্ষে নিয়ে মারধর করেন। ১০ থেকে ১৫ জন পুলিশ তাদের বেধড়ক মারধর করে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্রলীগ নেতারা এসে তাদের উদ্ধার করেন।