২০০৪ সালে বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন শেখ বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানকে ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। সেদিন হয়তো তাকেও এ ঘটনার শিকার হতে হতো। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বোনের (শেখ হাসিনা) কথা মেনে বেঁচে যান তিনি।
২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পূর্বঘোষিত সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি শোভাযাত্রায় রাস্তায় ট্রাকের ওপর তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্য শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে শুরু একের পর এক গ্রেনেড বি’স্ফোরণ। রক্ত আর ‘লা”শে’র সারি’তে ব’ন্যা বয়ে’ যায় ব’ঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে। বাকিটা ইতিহাস। সেই সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে চেয়েছিলেন জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও। কিন্তু বড় বোন শেখ হাসিনা অনেকটা জোর করেই সেদিন তাঁকে বাসাতেই রেখে যান। সে জন্য ছোট বোন রেহানা বড় বোনের ওপর অভিমানও করেছিলেন। ওইদিনের ভয়াবহ ঘটনার কথাগুলো তুলে ধরা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিজীবনের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘হাসিনা : এ ডটারস টেল’-এ।
শেখ রেহানা ২১ আগস্ট দিনের ঘটনার বিষয়ে বলেন, “আমি তো আপার সাথে বাসায় ছিলাম। আমি খুব অনুরোধ করলাম আপাকে। আপা, আমি যাই তোমার সাথে আজকে? তো উনি বললেন, ‘না, তুমি বাসায় থাক, তোমার যেতে হবে না’। না, আমি যাই তোমার সাথে, আজকে যাব আমি। (আপা বললেন) ‘না, তুমি যাবা না।’ আমি তখন অভিমান করে, খুব রাগ…। ছোটবেলার মতোই ধামধুম করে ঘরের ভেতর চলে গেলাম।”
‘এর মধ্যে বাসায় কয়েকজন মেহমান আসেন’ জানিয়ে শেখ রেহানা বলেন, “আপা বললেন, ‘উনাদের তুমি চা-নাস্তা খাওয়াও, গল্প করো, আমি এখনই আসব।’ এরপর মেহমানদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলার খবর পাই।”
‘তখন টেলিভিশনটা অন ছিল, সমাবেশের খবর দেখছিলাম। হঠাৎ ওই ঘটনা দেখে আমি মেহমানদের রেখে নিচে চলে আসি। ওই ঘটনা দেখে আমি (বাসার) নিচে চলে আসছি। ওর মধ্যে খবর পাই আপা (শেখ হাসিনা) নাই….।’
শেখ রেহানা বলেন, ‘এর মধ্যে আপার গাড়িটা (সুধা সদনে) এলো, এসে দাঁড়ালো। আমি সেখানে দাঁড়ানো। দেখলাম, আপার সমস্ত শরীরে, শাড়িতে, মুখে-চোখে র’ক্ত’ ভ’রা’। আমি আস্তে আমার আঁচলটা দিয়ে আপার এগুলো মুছে আপাকে ধরে ভেতরে আনলাম। তখন জিজ্ঞাসাও করি নাই, কী হচ্ছে বা কী হলো…আপাকে পেয়ে আমি ব্যাস, আর কিছু (বলে চুপ থাকি)।’
তবে শুধু ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলাই নয়, বহুবার শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার চেষ্টা করেন ষড়যন্ত্রকারী। তবে কথায় বলে, রাখে আল্লাহ মারে কে, আর মারে আল্লাহ রাখে কে। সকল বাধাপ্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।