আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে মাঠে সরব হতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। সাংগঠনি কাঠামো মজবুজ করতে নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক সংকট কোনো ভাবে কাটছে না রাজনৈতিক দলগুলোর ভিতরে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থায় প্রধান দটি দলের বিপরীত অবস্থানে নির্বাচনে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি দীর্ঘ ধরে নিরপেক্ষ সরকার জন্য আন্দোলন করছে কিন্তু আওয়ামীলীগ সংবিধানের বাহিরে যেতে রাজি না। রাজ পথে সমাধানের কথা বলছে দল দুটি। আজকাল আওয়ামী লীগ নেতারা মিথ্যার কোরাস গাইছেন বলে মন্তব্য করে এ প্রসঙ্গে যা বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘‘আজকাল আওয়ামী লীগ নেতারা মিথ্যার কোরাস গাইছেন।’
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এবি) আয়োজিত ‘জ্বালানি তেল, সার ও নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: বিপর্যস্ত কৃষক, কৃষিখাত ও জনজীবন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন,, বিএনপি মহাসচিব আওয়ামী লীগ আমলের সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনা করেছেন এতে তাদের খুব লেগেছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাদের আমলে তো বাংলাদেশে গুমের কথা জানতে পারলাম। পাকিস্তান আমলেও শুনিনি। তাহলে পাকিস্তান আমলের কথা শুনলে এত খারাপ লাগে কেন?
‘জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং নূরে আলম, আ. রহিম, শাওন হ/ত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে দলটির প্রতিবাদ সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আর এটি দেখে সরকার এখন বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সমন্বয়ে নতুন কৌশল নিয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রথমে আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হা/মলা চালায় পুলিশ পাশে দাঁড়িয়ে দেখে। তারা না পারলে তাদের পাশের পুলিশ বিএনপি কর্মীদের উপর হা/মলা করে গু/লি করে। আবার লন্ডনে যেন প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় প্রতিবাদ না হয় এজন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমেদের গ্রামের বাড়িতে অ/গ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশেই হয়েছে। তবে এভাবে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।
সংকটকালে খাদ্য উৎপাদন অনিবার্য। আজ ম/হামারীর কারণে দেশে খাদ্য সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে। আসলে বাংলাদেশে বরাবরই দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি বিরাজ করেছে।ক্ষুধা যে কত ভয়ংকর হতে পারে- যে মা তার সন্তানকে পর্যন্ত বিক্রি করছে। অথচ ক্ষুধা নিয়ে রাজনীতি এবং মানুষের সঙ্গে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৭৮/৭৯ সালে গ্রামীণ উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সেই থেকে শুরু হলো গ্রামের সমৃদ্ধি।আসলে একজন জনদরদী শাসক হলেই কেবল জনগণের কষ্ট অনুভব করে তাদের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করা যায়।
“এই সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায় বলে নিজেদের লোক দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছে। কিন্তু ওই আইনে বলা হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু তারা তাও বাতিল করেছে।”তাদের যেটাতে সুবিধা হয়েছে সেটি নিয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর কথার সাথে কাজের কোন মিল নেই।তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াও করলো আবার তারাই বাতিল করলো।১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন। তিনি বিরোধী দলে যোগদান করলে ধর্মঘট করবেন না, কিন্তু তিনি আবার এটি করেছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, আজকে দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা বিরাজ করছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ বিরাজ করছে। চলছে সার সংকট। জামালপুরে সারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে কুইক রেন্টালের নামে সামিট গ্রুপের কাছে গেছে ১২ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা জনগণের কাছ থেকে নিতে বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। তবে এসবের নামে কোথায় কত টাকা পাচার হয়েছে সেগুলো এখন বেরিয়ে আসছে। এগুলো লুকানো যাবে না।
এবি সভাপতি কৃষিবিদ রাশেদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, কৃষিবিদ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুক, মো. দিদারুল আলম, নুরুন্নবী শ্যামল, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আশাবুল হক আশা, ডাঃ শফিকুল ইসলাম শফিক, আকিকুল ইসলাম আকীক, শেখ সাফি শাওন, সিরাজুন্নবী মামুন, আহসান হাবিব মার্ঘ, কে এম আনিসুজ্জামান, কেআইএফ সবুর, সানোয়ার আলম,কামরুজ্জামান জনি ও শওকত ওসমান শামীম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভুইয়া।
প্রসঙ্গত, সরকার আবারও ক্ষমতায় থাকতে বিরোধী দলের ওপর ভিন্ন কৌশলে হা/মলা করছে অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এবার আর আগের মতো সরকারকে বিনা ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।