বাংলাদেশের সরকারি অফিস গুলোর অবস্থা যেন প্রায় একই। সেখানে মানুষদের ভোগান্তির নেই কোন শেষ। আর এই ভোগান্তির কবলে পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের অনেক প্রিয় মুখও। সম্প্রতি বিআরটিএর ভোগান্তি নিয়ে একটি লেখনী লিখেছেন আব্দুন নূর তুষার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
বিআরটিএ এর অভিভাবক ; যোগাযোগ মন্ত্রী আমার প্রিয় মাননীয় ওবায়দুল কাদের ভাই।
আমি একজন প্রকৃত লাইসেন্সধারী গাড়ী চালক যার লাইসেন্সটি তিন দশকের।আমার লাইসেন্স নবায়নের জন্য আমি জমা দিয়েছি ও দশবছরের জন্য ফী দিয়েছি।আমাকে বহুদিন পরে বলা হলো ভারতীয় কোম্পানি মাদ্রাজ আইটি এই লাইসেন্সের জন্য আঙুঠা ছাপ্পা বা আঙুলের ছাপ নেবে ও তারাই এটা প্রিন্ট করবে।
একটি লাইসেন্স দেয়া হলো ফটোকপি করা কাগজে সিল মেরে যার মেয়াদ কয়েক মাস। সেটা আমি সিল মেরে আনলাম বিআরটিএ থেকে।
আঙ্গুলের ছাপ দিতে গেলে বলা হলো আরো টাকা দিতে। এটা নাকি ভুলবশত কম নিয়েছে। আমি প্রতিবাদ করলে ও যুক্তি দিলে তারা এই ফি টা আর নিলো না বরং তারাই এটা দিয়ে দিলো বা হিসাবে ঠিক করলো।
এরপর আবার সীল মারতে বিআরটিএ যেতে হলো। সেখানে গিয়ে মেয়াদ নিলাম এই আশায় যে এরপর কার্ড দেবে।সেটা এখনো দেয় নাই। এখন আবার মেয়াদ বাড়ালাম।আমি দশবছরের পয়সা দিয়েছি কি এভাবে বারবার তিনমাস পরপর গিয়ে সীল মারাতে আর যাতায়াত খরচ ও সময় নষ্ট করতে?
স্মার্ট বাংলাদেশ নামের এই সব কর্মসূচি দেবার সময় কি আপনারা এসব দুর্ভোগ দিচ্ছেন সেটা মনে রাখেন?আপনি একজন যুক্তিশীল রাজনীতিবিদ। আপনি বলেন তো ; এই যে শত শত লোককে লাইসেন্স এর পয়সা নিয়ে আপনার অধীনস্থ বিআরটিএ ঘোরাচ্ছে তাতে করে এই গালভরা স্মার্ট বাংলাদেশের ওপর মানুষের আস্থা বাড়ছে নাকি কমছে?
আপনি অসম্ভব ক্ষমতাবান ও বিনয়ী মানুষ। আপনি একই সাথে বুদ্ধিমান ও কৌশলী। আপনি পরপর তিনবার দলের সাধারন সম্পাদক। আপনি আমাকে অতিশয় স্নেহ করেছেন। আপনি নিজের প্লেট থেকে আমাকে মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন একসাথে খাবেন তাই। এতো স্নেহ কোনো রাজনৈতিক মানুষ করে না।
আপনার দপ্তরের এই অদ্ভুত কর্মকাণ্ডকে আমি মেনে নিতে পারি না। এসব দুর করা কয়েক দিনের বিষয় কিন্তু কোন এক অদৃশ্য মহলের স্বার্থে এসব সমাধান হয় না।বিআরটিএতে বসে আমি প্রবাসী গাড়ীচালককে অফিসারদের পায়ে ধরতে দেখেছি। লাইসেন্স পাচ্ছে না বলে কাঁদছে। আকামা ক্যান্সেল হচ্ছে; ভিসা পাচ্ছে না।
আপনার মতো মানুষের ইমেজ এসব কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।দশবছরের টাকা দিয়ে দশমাসে এপর্যন্ত চারবার গিয়েছি। লাইসেন্স পাই নাই। এসব চললে লোকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিশ্বাস করবে না। ভাববে এগুলো সত্য নয়।
( আজ আবার দিয়েছে সময় বাড়িয়ে। এই হয়রানির নামই স্মার্ট বাংলাদেশ।)
প্রসঙ্গত, এ দিকে বিআরটিএ নিয়ে ভোগান্তি দেশের মানুষের কাছে নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে সরকার থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিলেও হয়নি তার কোনো প্রতিকার। বিশেষ করে দেশের বিআরটিএ এর অফিস গুলোর মধ্যে এখনো চলছে ঘুষ আর দলের দৌরাত্ম।