শ্রম আদালতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই বিদেশ থেকে বিবৃতি আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ নোবেল বিজয়ীরা বিচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তবে সরকার এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য পরিষ্কার করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ড. ইউনূসের বিচার পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। তাই বাংলাদেশে আসার জন্য সরকারের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘তাদের (ওবামা ও হিলারি) জানানো হয়েছে। তারা এই সাক্ষাৎকার সম্পর্কে জানেন। তবে তারা আসতে চাইলে একটা কাজ শেষ করে আসতে হবে। তাদের ডাকলে তারা আসতে পারবে না। মামলাগুলোর বিষয়ে বক্তব্য আনা হয়েছে। তারা এসে দেখলেই বুঝবে এ ক্ষেত্রে কোনো সারবস্তু নেই।
ইউনূসের বিচার পর্যবেক্ষণে যারা আসবেন তাদের স্বাগত জানিয়েছেন সরকার কর্তৃক নিযুক্ত আইনজীবী ড. খুরশিদ আলম খান বলেন, যারা বিচার পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন তাদের স্বাগত জানাই ।তবে এর জন্য আদালত ব/সে থাকবে না। তারা যদি নির্দ্বিধায় আমার সাথে বসতে পারে, তাহলে আমি বসব। তারা আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে বসতে পারেন অথবা তৃতীয় পক্ষের সঙ্গেও বসতে পারেন। আমরা সবসময় এটাকে স্বাগত জানাই।’
এদিকে গত ৩০ আগস্ট গ্রামীণ ব্যাংক এক চিঠিতে মো. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রামীণ কমিউনিকেশনসকে জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করা হবে না। এ ঘটনায় ইউনূসের বিরুদ্ধে ৯০০ শ্রমিকের মামলার আশঙ্কা করছেন আইনজীবী। শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৬৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এর মধ্যে দুটি ফৌজদারি এবং বাকিগুলো শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন বলে জানা গেছে। বিচারাধীন মামলার মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের ৬৪টি মামলা, গ্রামীণ কল্যাণের ৬৯টি মামলা, গ্রামীণ যোগাযোগের ২৫টি মামলা, গ্রামীণ ফিশারিজের ৮টি, আয়করের ৮টি মামলা এবং দুটি ফৌজদারি মামলা।
চিঠি প্রত্যাহারের অনুরোধ
নোবেল বিজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান আদালতের মামলা স্থগিত করার জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৮৩ জন বিবৃতি-চিঠি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো চিঠি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। তারা হলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার ও ইমরুল কায়েস খান।
বৃহস্পতিবার বান কি মুন, বারাক ওবামা এবং হিলারি ক্লিনটনসহ নয়জনকে ইমেল করে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। এই চিঠির অনুলিপি জাতিসংঘের মহাসচিব ও ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকেও পাঠানো হয়েছে।