আসন্ন নির্বাচন পর্যন্ত কোনভাবেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না বিরোধী দলের নেতারা। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে যেভাবেই হোক নির্বাচনের আগে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান তারা। দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে সূচনা বানিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করে আসছে বিরোধী দলের এসকল নেতারা। তবে এবার সংবাদমাধ্যমে ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিলেন আমির খসরু।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে কেউ নেই। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। বাংলাদেশের মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। নির্বাচন পর্যন্ত এ সরকার রাখা যাবে না। নির্বাচনের আগেই এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
কুমিল্লায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু ও তার স্ত্রী শামীমা বরকত লাকির ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ স্টেডিয়ামে উপজেলা যুবদল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু আরও বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো রাজনীতি নেই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি হাইজ্যাক করা হয়েছে। তাদের রাজনীতিকে হাইজ্যাক করে কিছু গোষ্ঠী এখন এই দেশ চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার আজ দেশ চালাচ্ছে না। শিগগিরই আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। সেই রূপরেখা অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের আগে আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা হবে। আন্দোলনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ভোটের অধিকার আদায় না করে তারা ঘরে ফিরবে না। রাজপথে বিক্ষোভের মাধ্যমে এই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজানো হবে।
বরকতুল্লাহ বুলুর ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এই বিএনপি নেতা।
রক্তের প্রতিশোধের কথা উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা শাওন হত্যা ও বরকতুল্লাহ বুলুর ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতে চাই। নোয়াখালীর মাটিতে অন্য কারো রক্ত পড়লে আমরা সেই রক্তের প্রতিশোধ নেব।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, আজ থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত, হাসিনার পতন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান আবেদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে উঠেছে নানা ধরনের প্রশ্ন। এসকল বিষয়কে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের নেতারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সারাদেশের জনগণকে খেপিয়ে তুলেছে বলে ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা। তাদের দাবি নির্বাচন বেলেট ভোটের মাধ্যমে হোক বা ইভিএমের সে বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই সেটা একান্তই সিইসির সিদ্ধান্তই নির্ধারণ হবে। তাই এ সকল বিষয় নিয়ে আমাদের দোষারোপ করাটা ভিত্তিহীন।