Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ওখানে আবার আওয়ামী লীগের একটা সিল লাগবে : ফখরুল

ওখানে আবার আওয়ামী লীগের একটা সিল লাগবে : ফখরুল

ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের লাগামহীন দুর্নীতি ও লু/টপাটের জন্য দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটের মুখে। অথচ তাদের মন্ত্রী-এমপিরা কথায় কথায় বলছে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন হয়েছে তবে সেটা আওয়ামীলীগে নেতাকর্মীদের দেশের জনগণের নয় বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উন্নয়নের নামে দেশে যে লু/টপাট করেছে তার খেসারত দিচ্ছে জনগণ। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি পন্যের দামের বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারন জনগণ। আমরা আর শেখ হাসিনাকে দেখতে চাই না মন্তব্য করে যা বললেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কথা বেশি নাই, কথা একটাই—আমরা আর শেখ হাসিনাকে দেখতে চাই না।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে তিলপাপাড়া জোড়াপুকুর মাঠের পাশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে দলীয় কর্মী হ/ত্যা, দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের স/ন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদ ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অধীন খিলাগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানা বিএনপি এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা বেশি নাই, কথা একটাই—আমরা কি আর শেখ হাসিনাকে দেখতে চাই? যারা আমাদের স্বাধীনতার আশা-আকাঙ্খা ধ্বং/স করেছে, যারা আমাদের সন্তানদের হ/ত্যা করেছে, যারা আমাদের রুটি-রুজি বন্ধ করে দিয়েছে, যারা কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নিয়েছে, আমরা কি চাই? আমরা কি সেই সরকারকে আর দেখতে চাই।

তিনি বলেন, আজ আমরা চাল-ডাল-তেলের দাম কমানোর জন্য আন্দোলন করছি। কী বললেন শেখ হাসিনা? প্রতি কেজি চাল দশ টাকা দেবেন? তিনি কৃষকদের বিনা মূল্যে সার দেওয়ার কথা বললেও কৃষকরা এখন সেই সার পাচ্ছেন না। সারের দাম বেড়েছে তিনগুণ। বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। সেই চাকরি কি আপনারা পেয়েছেন? বরং লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও হয় না, ওখানে আবার আওয়ামী লীগের একটা সিল লাগবে, তাই না?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বং/স করে দিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বং/স করেছে, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বং/স করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

দলীয় নেতাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন সময় হচ্ছে কাজের। কথা বলার সময় নেই। একটাই কাজ- বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। কারণ আজ ক্ষমতায় থাকা এই সরকার আমাদের সব অর্জনকে ধ্বং/স করে দিয়েছে। আমরা একটি সুখী সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযু/দ্ধ করেছি। আমরা আমরা চেয়েছিলাম এখানে গণতন্ত্র থাকবে, আমরা প্রতিবাদ করতে পারবো, কথা বলতে পারবো, সভা-সমাবেশ করতে পারবো। সাধারণ মানুষকে মোটা কাপড়, মোটা ভাত, মোটা চাল দিতে পারবো। এরা (বর্তমান সরকার) কী করেছে! একবার ’৭১ থেকে ’৭৫ এখন আবার এই সময়ে তারা আমাদের সেই স্বপ্নকে ধ্বং/স করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলের কথা বললে আমাকে বলা হয়- পাকিস্তানের দালাল। পাকিস্তান আমলে চালের দাম আর আজকের চালের দামের মধ্যে পার্থক্য কী? তখন মানুষের জীবন-যাত্রার মান কী ছিল, এখন কত হয়েছে? তখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি এই কারণে যে, পাকিস্তান আমাদের শোষণ করছিল, পাকিস্তান আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যু/দ্ধ করে সেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম। আর এরা (সরকার) আমাদের আবার সেই অবস্থায় নিয়ে এসে ফেলেছে। আজকে মেগা প্রজেক্ট করে মেগা দুর্নীতি করছে। টাকা পাচার করছে। বিদেশে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। আর আমাদের মানুষকে হ/ত্যা করছে। বরকত উল্লাহ বুলু, তাবিথ আউয়াল, সেলিমা আপাকে হ/ত্যার জন্য আঘাত করে, ভোলা-নারায়ণগঞ্জে নূরে আলম, আবদুর রহিম, শাওনকে হ/ত্যা করে আন্দোলনকে দমন করে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। যার মাধ্যমে সংসদ গঠিত হবে, সরকার গঠিত হবে।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা। আনি, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদল নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, গোলাম মাওলা শাহীন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ। পার্টি এবং অন্যান্য।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে দলের তিন কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ১১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর ১৬টি স্থানে সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপি।

প্রসঙ্গত, দেশের মানুষকে জিম্মী করে সরকার যখন যা মন চাচ্ছে করছে কিন্তু এ সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলন করে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *