সম্প্রতি নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কৌশল বদলাতে শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে চাপের মুখে রেখেছে। অপর দিকে জাতীয় পার্টি দলের শরীক থাকলেও ভিন্ন কৌশলে তাকে নির্বাচনে বিরোধী দল হিসেবে করার জন্য হাতে রেখেছে। তার প্রমাণ মেলেছে সম্প্রতি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে অব্যাহতির পরও সরকারে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেওয়ায়। রওশন এরশাদকে অপসারণ এবার স্পিকার বরাবর পাল্টা চিঠি পাঠনো সম্পর্কে যা বললেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা রাঙ্গা
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরাতে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল স্পিকার বরাবর যে চিঠি দিয়েছে, তার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না জানিয়ে স্পিকারের কাছে এবার পাল্টা চিঠি পাঠাবেন দলটির বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। জাপার এ সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্যকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সম্প্রতি দল থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গলবার স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে রওশনকে অপসারণের প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানাবেন তিনি।
জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকের দিন তাকে এজেন্ডা জানানো হয়নি বলে দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন মশিউর রহমান রাঙ্গা।
তিনি বলেন, ‘ওইটা বেআইনি করেছে। তারা এটা আমার হাত দিয়ে করিয়েছে। আমি তখনও বলেছি এটা বেআইনি। তারা পরে এসে বলছে, চিঠিতে তিনটি সই দেওয়া আছে, সেগুলো সব রাঙ্গার সই। মিটিং ডাকছে রাঙ্গা, প্রিজাইড করছে রাঙ্গা, সই করছে রাঙ্গা। আমি বললাম, তাহলে এজেন্ডা কে দিলো?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এজেন্ডা চেয়েছিলাম, তারা দেয়নি। রেজ্যুলেশন লিখলেন তাদের লোক, আমাকে বললেন, সই করতে বলেছেন স্যার (জি এম কাদের), এখানে সই করেন। করে দিছি, স্পিকারের কাছে নিয়ে যেতে বললেন মুজিবুল হক চুন্নু, নিয়েও গেলাম। স্পিকারও বললেন, আর কয়েকটা মাস ছিল। এ কয়েকটা মাসের জন্য তাকে (রওশন এরশাদ) অপমান করবেন আপনারা? আমি বললাম, তাদের অপমান করার শখ হয়েছে তো তাই করলেন। স্পিকার বললেন, দেখি আমি আপার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
রওশন এরশাদ গত ৩০ আগস্ট হঠাৎ করে কাউন্সিল ডাকেন। যদিও জিএম কাদের দাবি করেন, কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রওশন এরশাদের নেই।
কাউন্সিল ডাকায় ক্ষুব্ধ জিএম কাদেরের নির্দেশে গত ১ সেপ্টেম্বর রওশন এরশাদকে অপসারণে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেয় জাতীয় সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল। এরপর ১৮ দিন পেরিয়ে গেছে।
তবে চিঠি দেওয়ার পর চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিরোধী দলের চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা গণমাধ্যমকে বলেন, রওশন এরশাদকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে তিনি একমত ছিলেন না। এ কারণে রাঙ্গাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাতীয় পার্টি। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গা দাবি করেন, এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গা দাবি করেন রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না।
রাঙ্গা বলেন, আমি স্পিকারকে জানিয়েছি যে এটা নিয়ম মতো হয়নি। সবকিছুর তো একটা নিয়ম আছে। আমি স্পিকারকে লিখিত জানিয়ে দেব। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। কারণ এটার মধ্যে কোনো এজেন্ডা ছিল না।
তিনি বলেন, আমি স্পিকারকে বলবো আমার আপত্তি আছে। বিষয়টি সঠিকভাবে প্রক্রিয়ায় হয়নি।
সাধারণত, দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে স্পিকার তা অনুমোদন করেন। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা এখন স্পিকারের হাতে।
প্রসঙ্গত, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে যে প্রক্রিয়া সরানো চেষ্টা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সাবেক এই প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি আরোও বলেন এটি চক্তান্ত করে করা হয়েছে।