বলিউডের তুমুল জনপ্রিয় ও কিংবদন্তি অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। শুধু তাই নয়, সাবেক ‘বিশ্ব সুন্দরী’ হিসেবেও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিন। ক্যারিয়ারে একের পর এক ব্যবসায় সফল সিনেমা উপহার দিয়ে কোটি কোটি ভক্তের মন জয় করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
‘মি টু’ নিয়ে যখন লাজ-লজ্জা দূরে ঠেলে হলিউড-বলিউড সরব, তখন আন্দোলনকারীদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি। যদিও নিজের কোনও খারাপ অভিজ্ঞতার কথা এখনও প্রকাশ্যে আনেননি অমিতাভ বচ্চনের ছেলের বউ।
অনেকেই ভেবেছিলেন বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ হয়তো এমন কোনো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হননি। একদিকে মিস ওয়ার্ল্ডের খেতাব, অন্যদিকে তারকাদের সঙ্গে সম্পর্ক, তারপর বচ্চন পরিবারের সদস্য হয়ে যাওয়া ঐশ্বর্যকে হয়তো বাজে প্রস্তাব দেওয়া এত সহজ ছিল না।
কিন্তু ধারণাটি যে পুরোপুরি সঠিক নয়, তা সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন ঐশ্বরিয়ার সাবেক এক ম্যানেজার। ঐশ্বরিয়ার ম্যানেজার সিমন শেফিল্ডস। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে ঐশ্বরিয়ার কাজ দেখাশোনা করতেন সাইমন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, হলিউড পরিচালক হার্ভে ওয়েইনস্টেইন একসময় ঐশ্বরিয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। এ ব্যাপারে তিনি সাইমনকে সরাসরি প্রস্তাবও দেন।
হার্ভে সেই বিখ্যাত পরিচালক যাকে ঘিরে হলিউডে ‘মি টু’ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। হলিউডের শীর্ষস্থানীয় সব অভিনেত্রীই হার্ভির বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, গুইনেথ প্যালট্রো, জেনিফার লরেন্সের মতো অভিনেত্রীরা অভিযোগকারীদের মধ্যে ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, হার্ভে তখন থেকে হলিউডের ‘যৌন শিকারী’ বলে ডাকা হয়।
ঐশ্বরিয়া ঐ হার্ভির সাথে কিভাবে দেখা করলেন? কখন? সিমন বলেন, ঐশ্বরিয়া ২০১৪ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তখন তিনি বিবাহিত। সঙ্গে ছিলেন স্বামী অভিষেক বচ্চনও।
ঐশ্বরিয়া বিদেশেও বেশ কিছু কাজের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন। মাঝে মাঝে কাজের জন্য হলিউডের রাজধানী শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে যেতেন। সেই সময়ে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে হার্ভে একাধিকবার দেখা করেছিলেন।
ম্যানেজার হিসেবে ঐ সব মিটিংয়ে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে থাকতেন সিমন। তিনি বলেন, বেশ কয়েকবার হার্ভে তাকে রুম ছেড়ে যাওয়ার জন্য স্পষ্ট সংকেত দিয়েছেন। কিন্তু সিমন ইচ্ছাকৃতভাবে সে সব ইঙ্গিত বুঝতে চায়নি।
এমনই এক বৈঠকে ঐশ্বরিয়ার চোখের আড়ালে সিমনকে একাই ধরে ফেলেন হার্ভে। সাইমন বলেন, হার্ভে তাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ঐশ্বরিয়াকে একা পেতে কী করতে হবে?
জবাবে সিমন যা বললেন, তা তিনি প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। তিনি বলেন, এগুলো ছাপিয়ে প্রকাশ করা উচিত নয়। যাইহোক, সাইমন স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে তিনি হার্ভেকে তার ক্লায়েন্টকে স্পর্শ করতে দেবেন না।
সেই দিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে হলিউডের পরিচালককে ‘শূকর’ উল্লেখ করে সাইমন বলেন, “ঐশ্বরিয়ার জন্য হতাশ হয়ে তিনি কী করছেন তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এমনকি, আমাকেও আমার ক্যারিয়ার নিয়ে হুমকি দিতে ছাড়েনি হার্ভে।”
ঐশ্বরিয়া কি বিষয়টি জানতেন? নাকি সে কিছুই অনুভব করেনি? সাক্ষাৎকারে সাইমনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ঠিক তেমনই সাইমনের দাবির পরেও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ঐশ্বরিয়া। সূত্র: আনন্দবাজার
বর্তমানে বচ্চন পরিবারে পুত্রবধূ হিসেবে যেমন সংসার সামলাচ্ছেন, তেমনই অন্যদিকে অভিনয়ও চালিয়ে যাচ্ছেন বলিউডের অন্যতম গুণী এই অভিনেত্রী।