বুধবার মাউন্ট মাউঙ্গানুইতে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট উইকেটের ঐতিহাসিক জয়ের স্ক্রিপ্ট করার সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের হাসি ছিল দেখার মতো। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইন আপ ভেঙে দিতে ফাস্ট বোলার এবাদত হোসেন বল হাতে তার ক্যারিয়ারের সেরা পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডে সব ফরম্যাটে ৩২টি প্রচেষ্টার মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম এই জয়কে অনেক বর্তমান ও প্রাক্তন খেলোয়াড়, ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং বিশেষজ্ঞরা বিশেষভাবে দেখছে।
মাউন্ট মঙ্গানুইতে বাংলাদেশ দলের এই বড় ধরনের সাফল্য পাওয়ায় এবার ঘরের মাঠে স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করার জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই ধরনের জয়ে দলের যারা নির্বাচক তাদের দায়িত্ব বেশ কয়েকগুন বেড়েছে এমন ধরনের বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্সের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
ড্রেসিং রুমে এমন উল্লাস তো টাইগারদেরই মানায়। নিউজিল্যান্ডে অপ্রতিরোধ্য, দুরন্ত ও দুর্বার মুমিনুল-এবাদত-মুশফিকরা। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য পাওয়ায় জয়ধ্বনিতে মেতে ওঠে লাল-সবুজরা।
৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে কিউইদের হারিয়ে সিরিজ জয়ের আশা জাগিয়েছে টাইগাররা। অতীতেও দলের ক্রিকেটাররা ইতিবাচক পারফরম্যান্স করায় তাদের পুরস্কৃত করেছে বিসিবি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় পাওয়ায় ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের বিশেষ বোনাস দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে সবসময়ই প্রতিপক্ষের জন্য স্পিন বান্ধব উইকেট তৈরি করে থাকে বিসিবি। ফলে পেসাররা তাদের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হয়। যদিও মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর বড় কারিগর বাংলাদেশ দলের পেসাররা। তাইতো এবার কিউদের মাটিতে পেসাররা সাফল্য পাওয়ায় এবার ঘরের মাঠে স্পোর্টিং উইকেট তৈরির চিন্তা করছে বিসিবি।
প্রথম টেস্টের মতো ক্রাইস্টচার্চেও ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স প্রত্যাশা করেছে বিসিবি।
ঐতিহাসিক জয়ের পর টাইগার কান্ডারি মুমিনুল হক কৃতিত্ব দিলেন দলগত পারফরম্যান্সকেই। ম্যাচশেষে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, দুই দলই ম্যাচটি জেতার জন্য মরিয়া ছিল। তবে আমরা আমাদের বোলারদের দারুণ নৈপুণ্যে ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছি। এবাদত-তাসকিনরা দুই ইনিংসেই অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। বিশেষ করে এবাদত অবিশ্বাস্য ছিল।
মুমিনুল বলেন, সবশেষ কয়েকটা টেস্ট ম্যাচে আমরা ভালো করতে পারছিলাম না। আর তাই নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর তাড়না ছিল। অবশেষে সেটা পেরেছি। তবে এ মুহূর্তে জয়টা আপাতত ভুলে যেতে চাই। আমাদের এখন সব ভাবনা দ্বিতীয় তথা ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ঘিরে।
উল্লেখ্য, এটি ছিল ঘরের বাইরে বাংলাদেশের ষষ্ঠ টেস্ট জয় এবং শীর্ষ ৫ এ থাকা একটি দলের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জয়। যেখানে ২ নম্বরে নিউজিল্যান্ড এবং ৯ নম্বরে বাংলাদেশ। এর ফলে ঘরের মাঠে গত ১৭ টেস্টে নিউজিল্যান্ডের অপরাজিত থাকার ধারাও শেষ হয়ে যায়। এবাদত এই টেস্টে দূর্দান্ত পারফর্ম করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বাংলাদেশ দলের এই পারফরমেন্সের পর পরবর্তী টেস্ট ম্যাসে দলটি কী করবে সেটা এখন দেখার বিষয়। তবে আশা করা হচ্ছে টাইগাররা তাদের পারফরমেন্স ধরে রাখতে পারবে।