Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন নিয়ে চূড়ান্ত হলো বিএনপির ৯ দফা রুপরেখা, সরকার হঠানোর আশা দেখছেন সকল নেতারা

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন নিয়ে চূড়ান্ত হলো বিএনপির ৯ দফা রুপরেখা, সরকার হঠানোর আশা দেখছেন সকল নেতারা

বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে আন্দোলন জোরদার করার জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। ইতিমধ্যে দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মধ্যে নিজ নিজ দল ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে। এদিকে দলটি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বললেও সেখানে শর্ত জুড়ে দিয়েছে অর্থাৎ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। সেই লক্ষ্যেই এই রূপরেখা প্রণয়ন বলে জানিয়েছেন দলের বেশ কয়েকজন নেতা।

নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ৯ দফা খসড়া রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। বৈঠকে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে একমত হয়েছেন কমিটির নেতারা। তবে নির্বাচনের পর জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনে ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী যে বৃহৎ রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার চেষ্টা চলছে, এর মূলভিত্তি হচ্ছে এই রূপরেখা। সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠকে আওয়ামী লীগের অধীনে জাতীয় নির্বাচন না হওয়ায় নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বিএনপি। এই ঐক্যমতের ভিত্তিতে এখন আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ মাসেই সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনা শুরু হবে।

স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্য এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, রূপরেখার খসড়ার ভিত্তিতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে।

খসড়া রূপরেখায় ৯ পয়েন্ট

সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকার, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি রোধ, দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন গঠন, নিখোঁজ নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা। খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মহাসচিব কী বলবেন। সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন, কিছু বলার থাকলে বলবেন।

বৃহৎ ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারবিরোধী সব দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা চলছে। এ লক্ষ্যে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ৩৫টি ডানপন্থী ও বামপন্থী দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। সব দলই এই সরকারকে পতন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে একমত হয়েছে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বড় ঐক্য গড়ার কাজ চলছে। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের প্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের এক সপ্তাহ পর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খসড়ার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, স্থায়ী কমিটির খসড়া রূপরেখায় কিছু যোগ-বিয়োগ হতে পারে।

এদিকে মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বনানীতে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা এবং ঢাকায় ফেরার পথে নোয়াখালীতে বরকতুল্লাহ বুলুর ওপর হামলার নিন্দা জানানো হয়। সম্প্রতি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে সভায় বলা হয়, এ ধরনের বক্তব্য সরকারি চাকরি বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

উল্লেখ্য, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে দলটির নেতৃত্বের পর্যায়ে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে। সে দিক থেকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সচেষ্ট রয়েছে দলটি। কারণ বিএনপি’র একটাই পথ খোলা রয়েছে সেটা হচ্ছে – আন্দোলন। এমনটাই জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *