নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই যেসব পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা পরীক্ষা দিতে এসেছিল তাদেরকে ভুল নির্দেশনা দেওয়ার জন্য জয়নাল আবেদীন সেন্টু নামের একজন শিক্ষককে ৫ বছরের জন্য সকল ধরনের পাবলিক পরীক্ষা হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল (রবিবার) অর্থাৎ ১৪ নভেম্বর সকালের দিকে বাগাতিপাড়া উপজেলা সদর এলাকায়
অবস্থিত বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে পদার্থবিদ্যা পরীক্ষায় ২৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের মধ্যে ১২টির প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা বলা ছিল শিক্ষার্থীদের। কিন্তু শাখা কেন্দ্র বাগাতিপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের হল সুপারের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সেন্টু পরীক্ষার্থীদের সবগুলো অর্থাৎ ২৫টি প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়ার নির্দেশনা দেন। ফলে পরীক্ষার্থীরা পেছনে সময় পাবে না এমনটি ভেবে নিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে উত্তর দেয়।
পরীক্ষা শেষে হলরুম থেকে বের হয়ে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে তারা জানতে পারে তাদেরকে ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ওই শিক্ষক। এ সময় বি’ক্ষু’/ব্ধ হয়ে ওঠে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। ওই কেন্দ্রের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী দয়ারামপুর কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
পরে পরীক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের নিয়ে কেন্দ্র সচিব আব্দুস সালামের কাছে এসে বিস্তারিত জানান। পরে শিক্ষক জয়নাল আবেদীন সেন্টুকে অ’বরু’দ্ধ করে রাখেন। কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আহাদ আলীকে অবহিত করা হয়।
এ বিষয়ে কেন্দ্র সুপার জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমার ভুল হয়েছে আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এ সময় সমস্ত ঘটনা শুনে ইউএনও শিক্ষা বোর্ডের সাথে কথা বলে ওই কেন্দ্রের ১৭০ জন পরিক্ষার্থীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা সমাধান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এবং কেন্দ্র সুপার বিকাল ৪টার দিকে সেন্টুকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কার করেন।
কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের পরীক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান মারুফ বলেন, ওই শিক্ষকের ভুল নির্দেশনার কারণে আমাদের তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর ভুল হয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল যিনি বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি জানান, শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু তারা ভুল নির্দেশনা পেয়েছে তাই তারা বাড়তি সুযোগ পাবেন। ঐ কেন্দ্রের যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা যারা ২৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার নির্দেশনা মেনে ২৫টিরই উত্তর দিয়েছে তাদের সকল প্রশ্নের উত্তরগুলো দেখে মার্ক দেওয়া হবে। তবে তারা সর্বোচ্চ ১২ নম্বর পাবেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী বাগাতিপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে যে ১৬০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তাদের রোল এবং সেই সাথে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের কাগজপত্রসহ একটি লিখিত বোর্ডে প্রেরনের সকল অফিশিয়াল প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। ভূল নির্দেশনা দেওয়া শিক্ষককে ৫ বছরের জন্য বহিষ্কার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।