এক সময়ের ব্যাপক জনপ্রিয় অভিনেত্রী জনপ্রিয় অভিনেত্রী এ্যানী খান বর্তমানে ধর্মীয় বিষয় নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন। তিনি গত বছরে ঘোষণা দেন যে তিনি আর কোনো অভিনয় করবেন না। এদিকে, এই সাবেক অভিনেত্রী বর্তমানে তার ভাইয়ের বাসায় থাকছেন। তিনি সেখানে থেকেই এবারের কোরবানীর ঈদ পালন করবেন। তিনি প্রায় সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলে থাকেন। তেমনি এবার দেশের একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ করেছেন তিনি। এ সময় তিনি জানিয়েছেন ঈদ আসলেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পন্যের দাম বৃদ্ধি করেন। এই সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে সাধারণ মানুষরা অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েন। এছাড়াও বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
দেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর রোজ রাখতে শুরু করেছেন অভিনেত্রী উম্মে হাবিবা এ্যানী খান। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি পবিত্র এই মাসের প্রথম নয় দিন নফল রোজা রেখেছেন। একইসাথে ‘কিয়ামুল লাইল’ বা রাতে নফল নামাজসহ ফজিলতপূর্ণ জিলহজ মাসের অন্যান্য ধর্মীয় নিয়মকানুন পালতে ব্যস্ত আছেন তিনি। ফলে এ মুহূর্তে বন্ধ রেখেছেন তার ব্যবসায়ী কার্যক্রম। এদিকে দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ্যানী খান বলেছেন, ‘এরা কিসের মুসলমান, এরা তো মানুষের কাতারেই পড়ে না।’
মঙ্গলবার দুপুরে নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানিয়েছেন এক সময়ের ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী এ্যানী খান।
ঈদুল আজহার দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে এ্যানী বলেন, পরিবারের সবার সাথে সকাল বেলা গোসল সেরে নতুন পোশাক পরে মসজিদে ঈদের নামাজে যাবেন। এরপর ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, কোরবানির পশু কোরবানী হলে এর গোশত রান্না করে দিনের প্রথম খাবার খাবেন তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা।
তিনি জানান, হজের দিন সোমবার থেকে তিন দিনের জন্য তার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রেখেছেন। এ সময় তিনি শুধু ধর্মীয় ও পারিবারিক কাজে সময় ব্যয় করছেন।
উম্মে হাবিবা এ্যানী খান বর্তমানে রাজধানীর উত্তরায় ভাইয়ের বাসায় আছেন। কোরবানির জন্য এরই মধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছেন তিনি। গরুটিও ওই বাসায় রাখা হয়েছে। বুধবার সেখানেই গরুটি কোরবানি করা হবে।
তিনি জানান, ইসলামের রীতি অনুযায়ী গরুটি কোরবানি করার পর গোশত তিন ভাগ করা হবে। এক ভাগ পরিবারের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়দের জন্য, আরেক ভাগ প্রতিবেশী অসহায় মানুষের মাঝে বন্টন করা হবে। তিনি নিজ হাতেই গোশত ভাগ ও বিতরণের কাজটি করবেন।
অভিনয় জগত ছেড়ে ধর্ম-কর্ম শুরুর পর এবার তার জীবনে চতুর্থ ঈদ। এর আগে গত বছর দু’টি ঈদ ও এবারের ঈদুল ফিতর ছিল তার নতুন জীবনের তৃতীয় ঈদ। এরপর ঈদুল আজহা পালত করতে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। আমি হ্যাপি।’
বর্তমান দ্রব্যমূল্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক এই অভিনেত্রী। এ্যানী খান বলেন, ‘এখন বাজারে যান, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ধরতে পারবেন না। সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই ব্যবসায়ী কারা, তারাও তো বেশিরভাগ মুসলমান। নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করেন। …এরা কিসের মুসলিম, এরা মানুষের কাতারেই পড়ে না। মুসলমান তো আরো পরের বিষয়। আগে তো মানুষ হিসেবে আমাদের মধ্যে মানবিক বোধটুকু থাকতে হবে। তখন মানুষ বলা যাবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে তো সেই মানবিকতাই নেই। আমরা কিসের মানুষ। এই ব্যবসায়ীরা রোজার সময়ও সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দেন। আবার কোরবানির ঈদের সময়ও একই কাজ করেন। কেন ভাই, দু’মাস ব্যবসা না করলে বা কম করলে কি মা”রা যাবেন? আসলে এদের চরিত্রটাই এমন হয়ে গেছে।’
উল্লেখ্য, এই সাবেক অভিনেত্রী একটা সময় অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত সময় পাড় করতেন। তবে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে অভিনয় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান। আর বর্তমানে তিনি ব্যবসা করছেন। তবে সেই ব্যবসাও আপাততো বন্ধ রয়েছে বলে জানান। এদিকে, দেশের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। ঈদ আসলেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে। এতে করে সাধারণ মানুষরা সব থেকে বিপদে পড়েন। এই সকল অসাধু ব্যবসায়ীরা কিসের মুসলিম বলেন তিনি।