বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুল কাদের। তিনি নব্বই দশক থেকে বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এবং অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক-সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন। তার অভিনীত কাজ গুলো দর্শক মাঝে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। এই জনপ্রিয় অভিনেতা ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাহ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার মৃ/ত্যু/ব/রনের এক বড় পূর্ন হয়েছে। তাকে স্মরন করে বেশ কিছু কথা জানালেন খাইরুন কাদের।
ষাটোর্ধ্ব খাইরুন কাদের আজও ভাবেন, শুটিং শেষে স্বামী বাড়ি ফিরবে। এভাবে গত এক বছর ঘুম ভাঙতেই এমনটি মনে হয়েছে অনেকবার। স্বামীর ব্যবহৃত জিনিস এখনো আগের মতো আগলে রেখেছেন তিনি। সেগুলোর দিকে তাকিয়েও এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কেটে যায় আবদুল কাদেরের স্ত্রীর। ক্যা/ন/সা/রের সঙ্গে লড়াই করে গত বছর আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। ‘এখনো বিশ্বাস হয় না, মানুষটা নেই’, ভারী কণ্ঠে বলেন খাইরুন কাদের। কান্নার স্বরে তাঁর কথা জড়িয়ে আসতে থাকে। তিনি বলেন, ‘এ রকম তো আশা করিনি। আশা ছিল সে সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। তা আর হলো না। হুট করেই সব শেষ হয়ে গেল। গত এক বছরের একটি দিনও আমাদের ভালো যায়নি। রাতে ঘুমাতে পারিনি। তার শুটিংয়ের, অফিসের সব জিনিস আমার পাশে থাকে। সেগুলোর দিকে তাকালে খারাপ লাগে। শুধুই মনে হয়, মানুষটা শুটিংয়ে গেছে। শুটিং শেষ হলেই ফিরে আসবে।’
সর্বশেষ ‘নেত্রী: দ্য লিডার’ সিনেমায় যুক্ত হয়েছিলেন অভিনেতা আবদুল কাদের। সেই সিনেমার জন্য তাঁর সব কস্টিউম কেনা হয়েছিল। সেগুলো এখনো যত্ন করে রেখেছেন তাঁর স্ত্রী। খাইরুন বলেন, ‘তাঁর জামা–কাপড়, জুতা ব্যাগে ভরে রেখেছি। সেগুলো প্রতিমুহূর্তে আমাদের কষ্ট দেয়। আমুদে একটা মানুষ ছিল। অফিসে ব্যস্ত থাকত। অনেক সময় পরিবারকে সময় দিতে পারত না। এ জন্য শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে সময় দিত। খুব সাংসারিক মানুষ ছিল সে। আমাদের জন্য সব গুছিয়ে রেখে গেছে। কোথাও কোনো কিছুর কমতি রাখেনি। জীবনের শেষ সময়ে নাতি-নাতনিরা তার সঙ্গ পেয়েছিল। কত কত স্বপ্ন ছিল পরিবার, সংসার নিয়ে।’ এটুকু বলে আর কথা বলতে পারলেন না খাইরুন কাদের।
আবদুল কাদেরের মৃ/ত্যু/বা/র্ষিকী উপলক্ষে গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের একটি এতিমখানায় দোয়ার আয়োজন করা হয়। আজ রোববার বেলা ১১টায় বনানী কবরস্থানে তাঁর সমাধির সামনেও ছিল দোয়ার আয়োজন। কাদেরের নাতনি সিমরীন লুবাবা নাটক ও সিনেমায় অভিনয় করছে। সিমরীন বলে, ‘দাদার হাত ধরেই তো আমি অভিনয়ে এসেছিলাম। দাদার সঙ্গে আমার “নেত্রী: দ্য লিডার” সিনেমায় অভিনয় করার কথা ছিল। এখন শুটিংয়ে গেলেই দাদার কথা ভেবে কষ্ট লাগে। যেখানেই যাই, সবাই আদর করে বলে, “তুমি কাদেরের নাতনি”, তখন দাদার কথা ভেবে কষ্ট পাই। দাদাই আমার জন্য সব করে দিয়েছেন।’
এই জনপ্রিয় অভিনেতা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বদি চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে দর্শক মনে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। এখন ঐ নাটকটি দর্শক মাঝে বেশ স্মরনীয় হয়ে রয়েছে। অবশ্যে নাটকটিতে অভিনেতা আব্দুল কাদের বাদেও অনেক গূনি অভিনেতা-অভিনেত্রী অভিনয় করেছে।