গত মঙ্গলবার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালি জলদস্যুরা ছিনতাই করে। ইউরোপীয় মেরিটাইম ফোর্সের একটি জাহাজ এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ অবিলম্বে নাবিকদের উদ্ধারের অনুমতি চেয়েছিল।
তবে জাহাজের মালিক এসআর শিপিং এবং বিদেশ মন্ত্রক ইইউ এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। নাবিকদের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে সশস্ত্র অভিযানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোঃ খুরশেদ আলম বলেন, ‘সামরিক অভিযান চালানো হলে জাহাজের নাবিক ও ক্রুদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। যেহেতু জাহাজ মালিক মুক্তিপণ দিতে রাজি হয়েছেন, তাই এ ধরনের পদক্ষেপের কোনো প্রয়োজন নেই।’
এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুল করিম এমভি আবদুল্লাহর ওপর সামরিক অভিযানের অনুমোদন দিতে অস্বীকার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের নাবিকদের নিরাপত্তা আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। আমরা আমাদের নাবিকদের জীবনের ঝুঁকি নিতে পারি না, তাই আমরা উদ্ধার অভিযানের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি।’
জলদস্যুরা এখনো কোনো মুক্তিপণ দাবি না করলেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চলমান প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন করিম।
তিনি আরও বলেন, রোববার জাহাজের ক্যাপ্টেন স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
মেহরুল বলেন, ‘তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে নাবিকেরা সবাই ভালো আছেন এবং জলদস্যুরা জিম্মিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছে।’
উল্লেখ্য, মোজাম্বিক থেকে ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সোমালি জলদস্যুদের হাতে আটক হয়। গত রোববার জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশি জাহাজে জলদস্যুদের হামলা হলো। এর আগে ২০১০ সালে একই কোম্পানির এমভি জাহান মনি জাহাজও সোমালি জলসদ্যুরা ছিনতাই করেছিল। ওইসময় জাহাজে ২৫ ক্রু এবং ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ মোট ২৬ ব্যক্তি ছিলেন। মুক্তিপণ দিয়ে ১০০ দিন পর তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।