১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের দিনে বরগুনায় আ.লীগের দু’গ্রুপের সংঘ”র্ষে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে, যার কারণে আলোচনায় আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী এবং সেইসাথে ঘটনার বিষয়ে তিনি বরগুনা-১ আসনের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর তিনি আর বরগুনায় দায়িত্বে থাকতে পারেননি তাকে সরিয়ে দেয়া হয় বরিশালে। তবে তিনি সংসদ সদস্যকেও ছেড়ে কথা বলেননি ঘটনার পর।
জেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম এটম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে এমপি শম্ভু জেলা আর্ট একাডেমির সামনে আসেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর কাছে লাঠিপেটার কারণ জানতে চান। এরপর মহররম আলী এমপির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বলেন, ‘স্যার আমাদের গাড়ি ছাত্রলীগ ভেঙে দিয়েছে। আমাদের গাড়ি ভাঙল কেন জবাব দিয়ে যেতে হবে।’
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লার বড় ভাই জসিম মোল্লা এমপি শম্ভুর কাছে পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ করতে থাকলে এমপির সামনেই জসীম মোল্লাকে এএসপি মহরম ধমক দিয়ে বলেন, ‘গাড়ি ভাঙচুরের অ্যাকশন হবে কিন্তু।’
জবাবে জসিম বলেন, ‘মামলা দেন, মারলেন কেন?’ তিনি এ কথা বলতেই সঙ্গে সঙ্গে এমপির সামনেই ডিবি পুলিশ জসিম মোল্লাকে মারধর করে গ্রেফতার করতে চাইলে পুলিশ এমপির নির্দেশে জসিম মোল্লাকে ছেড়ে দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মহরম আলীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পুলিশের তদন্ত কমিটি
বরগুনায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এসএম তারেক রহমানকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করেন। আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) তোফায়েল আহমেদ সরকার ও জেলা পুলিশ কার্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন খান।
সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বক্তব্য-
এ ঘটনায় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘আমি পুলিশকে বলেছি, যে আপনার গাড়ি ভাঙচুর করেছে তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে তুলে দেব। আসলে তাদের (পুলিশ) উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারধর করা। আমি তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে, যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
গতকাল রাত ৯টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরমের শাস্তি দাবি করেছি।
সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ ছাড়াই জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের আগে কাউন্সিল বাধ্যতামূলক, এই কমিটি দেওয়ার আগে তা করা হয়নি। আমরা আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবকদের জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।’
তবে বরগুনায় যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে অনেকে আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন এবং বলেছেন পুলিশের যেটা উচিত ছিল সেটাই করেছে। সরকারি সম্পত্তিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যা ঘটিয়েছে সেটা কোনভাবেই কাম্য নয়। অনেকেই পুলিশ সুপারকে বাহবা দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।