আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীদের পরিচয় দিয়ে একদল প্রচারক মাঠে নেমেছেন।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট জরিপ ও সেখানে সম্ভাব্য প্রার্থীদের এগিয়ে রাখার নাম করে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। সিরাজগঞ্জ থেকে এমন প্রতারণার মূল হোতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার বিনোদপুর গ্রামের মো. দুলাল হোসেনের ছেলে ও প্রতারক চক্রের মূলহোতা জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬), একই থানার নুয়ারনই গ্রামের বাহার মিয়ার মেয়ে তাছলিমা খাতুন (৩২) ও একই জেলার বেগমগঞ্জ থানার মনপুরা গ্রামের আছান উল্লাহর ছেলে মো. ফয়জুল্লাহ (৩০)।
এর মধ্যে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। অপর একজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের গ্র্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে প্রতারক দলের প্রধান জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে এক মানবাধিকারকর্মীর পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।
এরপর পাবনার ঈশ্বরদী থানার সহায়তায় ওই জেলার রূপপুর থানার সামনে থেকে গভীর রাতে বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দুই জনের কাছ থেকে ৬৩ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, একটি প্রিমিয়াম প্রাইভেটকার ও অপর এক মানবাধিকারকর্মীর পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
শাহজাদপুর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে জরিপের নামে আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য একটি প্রতারক চক্র বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে।
তারা বিভিন্ন প্রার্থীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জনমত জরিপে এগিয়ে রাখতে টাকা দাবি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র নিয়োগ করে এবং প্রতারকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।
তিনি বলেন, এরই সূত্র ধরে সোমবার শাহজাদপুর থেকে একজনকে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পাবনার রূপপুর এলাকা থেকে বাকি দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, প্রাইভেটকার ও মানবাধিকার কর্মীর পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা বিভিন্ন আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে আর্থিক সুবিধা চেয়েছিল। তারা নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন।