Wednesday , November 13 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এমপি আয়েনের ম্যাজিকে নড়েচড়ে বসলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতারা

এমপি আয়েনের ম্যাজিকে নড়েচড়ে বসলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতারা

অনেক নেতা বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর নিজেদের আখের গোছাতে মত্ত হন। খুব কম সময়ের মধ্যে গড়ে তোলেন বিপুল সম্পদ ও সম্পত্তি এবং হয়ে যান বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক। এ ধরনের ম্যাজিক ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাই দেখিয়েছেন। এবার কয়েক বছরের মধ্যে বিলিয়নার হয়ে গেলেন রাজশাহী ৩ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের নি’র্যা’/তনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। আরোপিত অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা, জমি দখল, মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার, নিয়োগ বাণিজ্য ইত্যাদি।

সর্বশেষ লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে। এমন অভিযোগ করেছেন পবা-মোহনপুরের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ অভিযোগ করা হয়।
এ অভিযোগে এলাকার ১৬ নেতাকর্মী উল্লেখ করেন, দল ছেড়ে আসা দলীয় নেতাকর্মীরা এমপি কর্তৃক নানাভাবে ‘নির্যা/’তন ও বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি শতাধিক কৃষকের জমি দখল করে পুকুর খনন করে বাগানবাড়ি নির্মাণ করেন। পুকুর দখলে জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপি সমর্থকদের চাকরি দিয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি নানা ধরনের কটূক্তি, নিষিদ্ধ দ্রব্যের কারবারিদের পৃষ্ঠপোষকতাও করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেন মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুলতান আলী, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আলী, মোহনপুর মহিলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের মহিলা সদস্য হাবিবা খাতুন, যুবলীগের সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, রায়ঘাটি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত হালদার প্রমুখ।

অভিযোগে বলা হয়, গত ২২ জুলাই কৃষকলীগের নেত্রী হাবিবা খাতুনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রে’ফতার করে এমপি। সংসদ সদস্যের জমি দখল নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার পর হাবিবা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারেও পাঠানো হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর গত ২৭ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে সংসদ সদস্যের বিচার দাবি করেন হাবিবা।

হাবিবা বলেন, হাবিবা বলেন, ‘বিলকুমারী বিলের পাশে তুলসিক্ষেত্র এলাকায় শতাধিক কৃষকের জমি দখল করে এমপি আলিশান বাড়ি আর পুকুর গড়ে তুলেছেন। গত ৯ বছরে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করায় আমাকে গোয়েন্দা পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁ”সিয়ে দেয়। ‘

এর আগে রায়ঘাটি ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামকে এমপির বাহিনী পিটিয়ে আহ”ত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হুমকিতে আ’তঙ্কি’/ত জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মোহনপুর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুরঞ্জিত সরকার। সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, জমি দখ”ল, নেতাকর্মীদের মা”রধর, নি”র্যা/তন, মিথ্যা মামলা, সা”ম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘এমপি আমাকে মোবাইলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। কয়েকদিন পর তার লোকজন আমাকে রাস্তায় ধরে মা”রধর করে। তার হস্তক্ষেপে আমাদের ইউনিয়ন কমিটিও বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোহনপুরে আওয়ামী লীগকে নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। তার ভগ্নিপতি উপজেলা চেয়ারম্যান, এক ভাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং তিনি নিজে এমপি। ‘

সুরঞ্জিত সরকার বলেন, ‘এমপি হওয়ার পর তার কর্মীরা আমাকে মা”রধর করে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমি এখনও এক পায়ে হাঁটছি। তার লোকজন এখনও হুমকি দিচ্ছে। ‘

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আয়েন উদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন একসময়। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তরুণ আয়েন উদ্দিনকে নৌকা তুলে দেয় আওয়ামী লীগ। এর পর থেকে বেপরো”য়া তিনি। নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, আয়েন উদ্দিন ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামায় নিজের আয় দেখান কৃষি খাতে ৫০ হাজার, ব্যবসা থেকে দুই লাখ ২৫ হাজার, স্ত্রীর চাকরি থেকে দুই লাখ ২৮ হাজার। নিজের নগদ টাকা দুই লাখ এবং স্ত্রীর এক লাখ টাকা ছিল তখন। এ ছাড়া ব্যাংকে নিজ নামে জমা ছিল চার লাখ টাকা। নিজের পাঁচ ভরি এবং স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণ দেখান। ওই সময় আয়কর নথিতে ঋণ দেখানো হয় এক্সিম ব্যাংকে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৬ টাকা।

২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার এমপি হন তিনি। এই হলফনামায় আয় বেড়ে যায় কয়েক গুণ। সম্পদের বিবরণে কৃষি খাতে আয় দেখানো হয় ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং মৎস্য খাতে ২০ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা দেখান ৪৩ লাখ ৮২ হাজার ৯২২ টাকা। স্ত্রীর নামে দেখান চার লাখ ৭৯ হাজার ৬৯১ টাকা। সঞ্চয়পত্র আগেরবার না থাকলেও এবার দেখান ১৫ লাখ টাকার। জীবনবীমা দুই লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকার। আগে কোনো যানবাহন না থাকলেও এবার যানবাহন বাবদ ৫০ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৫ টাকা দেখান। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট দেখান ৩০ লাখ টাকা মূল্যের। সেই সঙ্গে আগের ঋণও পরিশোধ হয়ে যায় তাঁর। এরপর গত চার বছরে এমপি আয়েন উদ্দিনের সম্পদ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে।

সরেজমিনে জানা গেছে, মোহনপুরের তুলসিক্ষেত্রে শিবনদীর বাঁধসংলগ্ন বিলকুমারী বিলে শতাধিক কৃষকের জমি দখল করে তিনি গড়ে তুলেছেন ৩০০ বিঘার পুকুর ও তিনতলা বাগানবাড়ি।

মহিষকুণ্ডি গ্রামের অখিল চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার অনুমতি ছাড়াই ৪৮ শতক জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছিল। পরে আমি অভিযোগ করলে আমাকে অন্য একটি জায়গায় সেই পরিমাণ দিয়েছেন এমপি। ’

অভিযোগ প্রসঙ্গে আয়েন উদ্দিন এমপি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কাউকে নি’র্যা’/তনের প্রশ্নই আসে না। কৃষক লীগ নেত্রী হাবিবাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। এখানে আমার কোনো হাত নাই। ’ জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পৈতৃক সম্পত্তিই অনেক। ’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আয়েন উদ্দিন এক সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই সুযোগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তরুণ আয়েন উদ্দিনকে নৌকা উপহার দেয় আওয়ামী লীগ। তারপর থেকে সে বেপরোয়া। নথিপত্রে দেখা গেছে, আয়েন উদ্দিন ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তার আয় দেখিয়েছিলেন কৃষিখাতে ৫০ হাজার, ব্যবসায় ২২৫ হাজার এবং স্ত্রীর চাকরি থেকে ২২৮ হাজার। তখন তার কাছে নগদ ২ লাখ এবং তার স্ত্রীর কাছে ছিল ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া তার নামে ব্যাংকে চার লাখ টাকা জমা ছিল। আপনার নামে পাঁচ ভরি সোনা এবং আপনার স্ত্রীর নামে ২0 ভরি সোনা দেখান। এ সময় আয়কর নথিতে এক্সিম ব্যাংকের কাছে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৬ টাকা ঋণ দেখানো হয়।

তিনি ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি হন। এই হলফনামা আয় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। সম্পদ বিবরণীতে কৃষি খাতে আয় দেখানো হয়েছে ১১ লাখ ৭০ হাজার এবং মৎস্য খাতে ২০ লাখ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৪৩ লাখ ৮২ হাজার ৯২২ টাকা। স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯১ টাকা। গতবার সঞ্চয়পত্র না থাকলেও এবার দেখান ১৫ লাখ টাকা। জীবন বীমা ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা। আগে কোনো যানবাহন না থাকলেও গাড়ির জন্য ৫০ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৫ টাকা দেখান। এছাড়া স্ত্রীর নামে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট দেখানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তার আগের দেনাও পরিশোধ করা হয়। এরপর গত চার বছরে এমপি আয়ন উদ্দিনের সম্পদ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।

সরেজমিনে জানা যায়, তিনি মোহনপুরের তুলসীক্ষেত্রে শতাধিক কৃষকের জমি দখল করে শিবনদী বাঁধের পাশে বিলকুমারী বিলে তিনশ বিঘা পুকুর ও তিনতলা বাগানবাড়ি নির্মাণ করেন।

মহিষকুন্ডি গ্রামের অখিল চন্দ্র দাস বলেন, আমার অনুমতি ছাড়াই ৪৮ শতক জমিতে পুকুরটি খনন করা হয়েছে। পরে অভিযোগ করলে এমপি ওই টাকা আমাকে অন্য জায়গায় দেন। ‘

অভিযোগের বিষয়ে আয়েন উদ্দিন এমপি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নি/’র্যা”তনের প্রশ্নই আসে না। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কৃষক লীগ নেত্রী হাবিবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখানে আমার কোনো হাত নেই। জমি সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে। দখল করে বললেন, আমার পৈতৃক সম্পত্তি অনেক। ‘

অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে পুরোপুরি একটি শ্রেণী অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর আমার বিরুদ্ধে নি/’র্যা”তনের যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটার কোনো প্রশ্নই আসে না। কৃষক লীগ নেত্রী হাবিবার বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের হয়, সেটা এমনি নয় তিনি সরকারি কাজে বাধা দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে আমার কোন হাত নেই। বিষয়টি ছিল জমি সংক্রান্ত অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘আমার বাবার অনেক সম্পত্তি।’

About bisso Jit

Check Also

কাল নিলেন উপদেষ্টার দায়িত্ব, আজ হলেন আসামি: যা বললেন বশির উদ্দিন

নতুন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন নিজের নামে মামলা প্রসঙ্গে বলেন, “আমি পুরো বিষয়টি স্পষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *