দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এমপি প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে এখন সারাদেশে আলোচনা চলছে। এবারের হলফনামাকে আগের নির্বাচনের হলফনামার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, অধিকাংশ এমপি প্রার্থীর সম্পদ বেড়েছে। কিছু স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের আয়ও বেড়েছে। আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা ও জেলা প্রতিনিধিরা প্রার্থীদের নির্বাচনী রেকর্ড বিশ্লেষণ করেছেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ব্যাংকে জমার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে লালমনিরহাট: গত পাঁচ বছরে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের আয় কমলেও ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুজ্জামান আহমেদের দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের পর তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন নুরুজ্জামান। হলফনামা অনুযায়ী তার বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৬ হাজার ৪০৬ টাকা। যা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় ছিল ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫৫ টাকা। পাঁচ বছরের জন্য তার বার্ষিক আয় প্রায় 2 লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে। তবে নগদ টাকার পরিমাণ কমলেও বেড়েছে ব্যাংকে জমার পরিমাণ। তার অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ অর্থের পরিমাণ ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৪ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকার পরিমাণ ২ কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ৯৯৭ টাকা। গত সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ২১০ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৩ টাকা। নগদ অর্থের পরিমাণ কমলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের একমাত্র ছেলে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুজ্জামান আহমেদ ও তার স্ত্রী হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেননি।
এমপির সন্তানরা তিন বছরে কোটিপতি
নওগাঁ: সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া নওগাঁ-৬ (রাণীনগর ও আত্রাই) আসনের উপনির্বাচনে ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর আনোয়ার হোসেন হেলাল এমপি নির্বাচিত হন। এমপি হওয়ার পর গত তিন বছরে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে আড়াই কোটি টাকার ওপরে। তার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে এই সময়ের মধ্যে কোটিপতি হয়ে গেছে, যদিও তার স্ত্রীর সম্পদ কিছুটা কমেছে। ২০২০ সালের উপনির্বাচনের সময় আনোয়ার হোসেনের করা হলফনামায় তিনি তার সন্তানদের নামে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ উল্লেখ করেননি। তবে এবার তার প্রার্থী হিসেবে দাখিল করা হলফনামায় বড় ছেলের নামে নগদ অর্থ, ব্যাংকে স্থায়ী আমানত এবং ডিপিএস-এফডিআর হিসেবে করা বিনিয়োগসহ মোট ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৭৬ হাজার ৭৪৮ টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। . ছোট ছেলের নামে ৮১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬২ টাকা নগদ ও ব্যাংকে জমা রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মেয়ের নামে নগদ, সঞ্চয় ও স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা ২ কোটি ২৩ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নিজেকে স্বশিক্ষিত উল্লেখ করেছেন। উল্লেখিত পেশাগুলি হল ঠিকাদার, ইটভাটা, কমিশন এজেন্ট, সরবরাহকারী এবং সাধারণ ব্যবসায়ী। হলফনামা অনুযায়ী ব্যবসা থেকে বছরে সবচেয়ে বেশি আয় করেন ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯২ টাকা। এ ছাড়া বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ আয় হয় ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। শেয়ার, সেভিংস সার্টিফিকেট ও ব্যাংক আমানত আকারে করা বিনিয়োগ থেকে তিনি আয় করেছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ টাকা। এ ছাড়া এমপি হিসেবে ভাতা ও অন্যান্য খাতে বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ৯ হাজার ৪৪৬ টাকা। মোট আয় ৬৭ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭৭ টাকা। ২০২০ সালের হলফনামায় বলা হয়, আনোয়ার হোসেন ব্যবসা থেকে ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৪১০ টাকা, বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৮ হাজার ৩০৫ টাকা আয় করেছেন। তখন আয় ছিল ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৭১৫ টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে বার্ষিক আয় বেড়েছে গুণেরও বেশি।
হুইপ সামশুলের স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৫ গুণ
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-১২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর স্ত্রী কামরুন নাহারের অস্থাবর সম্পদ পাঁচ বছরে ৬৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে সাড়ে তিন কোটি টাকা হয়েছে। হলফনামায় সামশুলের সম্পদ বিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে তার স্ত্রীর কাছে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার এফডিআর, ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ১২ লাখ টাকার দুটি বেসরকারি কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সামশুলের স্ত্রীর কাছে এসব সম্পদ ছিল না। এ ছাড়া কামরুন নাহারের কাছে নগদ ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৮৬ টাকা, ব্যাংকে ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা, স্বর্ণ রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এদিকে সামশ