প্রণোদনা ঋণের তহবিল ব্যবহারের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি এবি ব্যাংক। যাঁরা ঋণ নিয়েছেন, তাঁরা সেই টাকা খরচ করেছেন আগের ঋণ শোধ করতে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এসব অনিয়ম পরিদর্শন করেনি।
যার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। এমনি একটি অপরাধের সাথে যুক্ত দুই ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে পুলিশ। ( police. ) এরপর তাদের আদলতে প্রেরণ করা হয়। তবে অনেকেই বন্ধি জীবন পছন্দ করে না্ তাই তারা আদালতের নির্দেশ না মেনে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছে।
আদালতের আদেশ সত্ত্বেও গ্রাহকের বিবরণী দাখিল না করা এবং হাইকোর্টে হাজিরা দিতে না পারায় এবি ব্যাংকের ( AB Bank ) দুই কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ( Tuesday ) ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম ( Aminul Islam ) ও ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখার ব্যবস্থাপককে গ্রেপ্তার করেন বিচারক আবু তাহের। সাইফুর রহমান ( Abu Taher. Saifur Rahman ) হাইকোর্ট বেঞ্চ ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হক ( AKM Zahirul Haque ) এ আদেশ দেন।
ঢাকা গুলশান ও সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আগামী রোববার হাইকোর্টে হাজির করতে বলা হয়েছে। লিখিত আবেদনের শুনানিতে আদালতের এ আদেশ আসে। আদালতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়েস আল হারুনী।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল হারুনী সাংবাদিকদের জানান, সাতক্ষীরা শফি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিউর রহমান এবি ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে ঋণ নেন। ঋণের বিনিময়ে তিনি ব্যবস্থাপকের কাছে ব্যাংক স্টেটমেন্ট চাইলেন। কিন্তু তারা তাকে সেই ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দেয়নি। ব্যাংক একটি বিবৃতি দিতে অস্বীকার.
এরপর শফিউর লিখিত আবেদন করে বলেন, শুনানির একপর্যায়ে গতকাল (সোমবার) হাইকোর্ট আমাকে এবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও সাতক্ষীরা শাখার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছেন। আমিনুল ইসলাম হেড অফিস এভিপি ও সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজারকে মৌখিক আদালতের আদেশের কথা জানিয়েছি। আমি তাদের মক্কেল সফিউর রহমানকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে বলেছি। একই সঙ্গে আদালতের আদেশ অনুযায়ী এভিপি আমিনুল ইসলামকে আজ আদালতে হাজির হতে বলেছি।
আবেদনকারী গতকাল এবি ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় স্টেটমেন্ট আনতে যান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে তা দেয়নি। আদালতের আদেশের পরও তারা ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দেওয়ায় আদালত তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্পের কাজ ঠিকাদার মেসার্স শফি এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া হয়েছে। চারটি প্রকল্পের দুটির কাজের পক্ষে ঠিকাদার। শফিউর রহমান শফি ১০ অক্টোবর ২০১১ তারিখে এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখা থেকে ৭০ লাখ টাকা এবং ১০ অক্টোবর ২০১২ তারিখে ৭৬ লাখ টাকা, মোট ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা “দ্রুত ঋণ” নেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ঋণের শর্তানুযায়ী ব্যাংকে প্রদেয় চেক দিয়ে প্রকল্পের চালান (কিস্তি) পরিশোধ করবে। আপনি যদি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক শাখায় চেকের মাধ্যমে চালানটি উপস্থাপন করেন, তাহলে ব্যাঙ্ক চালান থেকে একটি 40 শতাংশ এবং অন্যটি থেকে 45 শতাংশ কেটে নেবে। বাকি টাকা ঠিকাদার শফিউর রহমান শফিকে দেওয়া হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ করে ২০১৬ সালে পাউবো প্রকল্প দুটির পুরো বিল পরিশোধ করে।
শর্ত অনুযায়ী শফিউর রহমানের ব্যাংক ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখা থেকে শফিউরকে জানানো হয়, তার কাছে ঋণ পরিশোধের জন্য এখনো ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৪৪৯ টাকা বাকি রয়েছে। এই টাকা তাকে দিতে হবে। পরে এবি ব্যাংক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ক্রেডিট আদালতে মামলা করে।
এমতাবস্থায় পাউবো কত তারিখে এবি ব্যাংককে কত চেক দিয়েছে তার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন ব্যাংকটির শাখার কর্মকর্তা শফিউর রহমান শফি। কিন্তু ব্যাংক শাখা জানিয়েছে যে ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তারা আপনাকে ঋণের সমস্ত বিবরণ দেবে না।
এ অবস্থায় ব্যাংক ঋণ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে রিট করেন ঠিকাদার শফিউর রহমান শফি।
এর আগেও এবি ব্যাংক লিমিটেড থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ২৬৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মাহিন এন্টারপ্রাইজের এমডি আশিকুর রহমান লস্কর। আত্মসাতের নথিসহ সব প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রাম আগ্রাবাদে ব্যাংকের শাখায় এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।