ঢাকায় দায়িত্বরত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে তা বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে। আর এদেশের ইন্সটিটিউটগুলো ঠিক করবে নির্বাচন কীভাবে হওয়া উচিৎ। নির্বাচন কেমন হবে? এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত বা রায় দেওয়ার অধিকার বাইরের কারও নেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্য কোনো দেশের নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে কথা বলা উচিত নয়।
রাজধানীর একটি হোটেলে “বাংলাদেশ-ভারত: সম্পর্কের রোল মডেল” বিষয়ক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দৈনিক ভোরের কাগজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। মডারেটরের এক প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ ভারতীয় কূটনীতিক বলেন, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারতীয়রা চায় বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী হোক। এটা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। যাতে দেশ অস্থিতিশীলতার দিকে না যায়। ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হলেও অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের সময় সবচেয়ে ভালো পথ বেছে নেবে।
প্রতিটি দেশের জন্য নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে। তবে নির্বাচনের চূড়ান্ত রায় জনগণের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে। নইলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌম জাতির অর্থ বা ধারণা কী থাকবে।
তিনি বলেন, আমি জানি, প্রতিটি দেশের জন্যই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তিন মাস পর ভারতে নির্বাচন হতে চলেছে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের জনগণ বুঝতে পেরেছে নির্বাচন পরিচালনার সর্বোত্তম উপায় কী। এ অবস্থায় নিজেদের ওপর আস্থা রাখা জরুরি। আমি মনে করি নির্বাচনের ফলাফল যেভাবে আসবে তা মেনে নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশের ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন সরজমিনে প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতায় আসন্ন ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনকে দেখেছেন? মডারেটরের এমন প্রশ্নের জবাবের শুরুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, এ দেশের একটি জটিল ইতিহাস রয়েছে। নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে শুরুতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ভারতকেও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। সে সময় ভারত চারটি যুদ্ধের সম্মুখীন হয়। নিহ”ত হন দুই প্রধানমন্ত্রী।
তামিলনাড়ু, উত্তর-পূর্ব অঞ্চল সহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহের মুখোমুখি হতে হয়েছে। রাজ্যগুলিকে পুনর্গঠন করতে হয়েছিল। ভারতীয় ফেডারেশনের রাজ্যগুলিকে সীমাবদ্ধ করতেও অনেক বছর লেগেছিল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সমাপনী বক্তব্য দেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারিক আহমদ করিম।