সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় ও সমালোচিত তারকা আশরাফুল আলম ( Ashraful Alam ) ওরফে হিরো আলম। গান ও অভিনয়ে নিজের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কোনো আলোচনা-সমালোচনা ছাড়াই নতুন নতুন গান ও পরিবেশনা চালিয়ে যাচ্ছেন হিরো আলম। সর্বশেষ হিরো আলম প্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের জনপ্রিয় গান আমারও পরানো যাহা চাই। নেক্সট এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে মুক্তি পাওয়া গানটি নেট দুনিয়ায় বেশ নেতিবাচক মন্তব্য পেয়েছে।
আশরাফুল আলম ( Ashraful Alam ), বগুড়ার ( Bogra ) ছেলে সবার কাছে তিনি হিরো আলম নামেই পরিচিত। নিয়মিত অভিনয়, প্রযোজনা এবং গান গেয়ে চলেছেন। তিনি বইও লিখেছেন। ইদানীং বেসামাল কণ্ঠে বিভিন্ন গান গেয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। এবার তিনি গাইলেন রবীন্দ্রসংগীত আমারও পরানও যাহা চায়। বরাবরের মতোই গানটি গেয়ে সমালোচনার শীর্ষে ছিলেন তিনি। যে ইউটিউব চ্যানেলে ( YouTube channel ) গানটি রিলিজ হয়েছে সেখানে খুব বেশি ভিউ না পেলেও শতাধিক মন্তব্য এসেছে, যার বেশিরভাগই নেতিবাচক। গানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ তার নামে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। একজন লিখেছেন, এক সময় এই গানটি আমার খুব প্রিয় ছিল। রবীন্দ্রনাথ ( Rabindranath ) থাকলে এক গ্লাস জলে ডুবে যেতেন। আরেকজন লিখেছেন, গানটি শুনে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু মন্তব্য পড়ে চেতনা ফিরে পেয়েছি। আসুন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে গানটির অকাল প্রয়ান হয়েছে।
হিরো আলমের এই গানটি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন পুলিশের সাইবার ক্রাইমের উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন, ‘মি. হিরো আলম নানা কারণে আমার অফিসে এসেছেন, কখনো অভিযোগ করতে, কখনো আসামি হতে। আমি অবশ্যই তার ব্যক্তিত্ব এবং স্বাধীনতাকে সম্মান করতে হবে। সংস্কৃতি চর্চার অধিকার তার আছে। বিভিন্ন সময়ে তিনি মৌলিক বা যৌগিক গানের সারথি হয়েছেন, সেটাও তাঁর শখ। অনেকে বলছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন, তার একটু বেশি সতর্ক হওয়া উচিত; যেমন, রবিবাবুর গানগুলো বাংলার অনেক মানুষের আবেগের জায়গা বলে মনে হয়, তাদের মতে মনে হয় তিনি সেই আবেগের প্রতি খুব একটা গুরুত্ব দেননি বা বিচার করতে পারেননি। তবে নেতিবাচক/ইতিবাচক ফলাফল যাই হোক না কেন, অনেকেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত অন্যায়ের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার চাইতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতার এই বোধের সাথে মানুষের অভিযোগের দ্বৈততাকে নেটিজেনরা কীভাবে দেখছেন?
তার মন্তব্য বইটিকে প্লাবিত করেছে বলে মনে হয়। মন্তব্যে, সঙ্গীতজ্ঞ বেলাল খান লিখেছেন, তার শিল্পের এই অবমাননাকর বিষয়বস্তুতে জাতির কোন লাভ নেই এবং যেহেতু তিনি এখন নিয়মিত বাণিজ্যিকভাবে এসব করছেন, তাই আমাদের উচিত তার সম্পর্কে সবকিছু এড়িয়ে যাওয়া। কমেন্টে ঘুরি খ্যাত গায়ক লুৎফর হাসান লিখেছেন, ওকে কন্ট্রোল করা জরুরি, না হয় মামলা করেন প্লিজ ভাই। এ সময়ের জনপ্রিয় গীতিকার সোমেশ্বর অলি লিখেছেন, ‘রবিবাবুর গান সবার জন্য উন্মুক্ত। হিরো গাইবে, জিরোও গাইবে। শুধু এটা এড়িয়ে চলুন, আমি কার ভোক্তা বা ভক্ত হব—এটা আমার ব্যাপার, কেউ সিদ্ধান্ত নেবে না। হিরো আলমের এই গানে স্ট্যাটাস দিয়েছেন চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক শাহাদাত রাসেল সেখানে তিনি লিখেছেন, হিরো আলম নামের একজন ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি মনে করি না তার আরাবিয়ান থেকে সুদান পর্যন্ত কোনো ভাষায় গান করা উচিত। এদেশে তার গানের অনেক উপযুক্ত শ্রোতা রয়েছে।
চাহিদা থাকলে, সাপ্লাই আসবে, সেটা বৈধ হোক বা বেআইনি হোক।এই অভ্যাস শুধু হিরো আলমেরই নয়, এদেশের নাটক, সিনেমা, গানের সিলমোহর করা বেশিরভাগ মানুষই পালন করেন। খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন সবাই। পাবলিক তারা খেতে দাও। কিন্তু আজ কিছু লোকের লেখা থেকে জানলাম যে হিরো আলম রবীন্দ্রনাথের গান ‘আমারাও পরানো যা চাই’ গেয়েছেন। অবাক হয়ে ইউটিউবে গিয়ে রাগ করেছিলাম। হিরো আলম গ্যাং রবীন্দ্রকে নিয়ে যা করেছে। সঙ্গীত হল সরাসরি গানের কথা এবং সুরের বিকৃতি। প্রত্যেকেরই গান গাওয়ার অধিকার আছে কিন্তু বিকৃত করার অধিকার কারো নেই। গানটি বাণিজ্যিকভাবে পুনঃনির্মাণ বা ব্যবহার করা গেলেও মূল গায়কের অনুমতি নেওয়া জরুরী। গানের মালিক। আমি অনুমান করছি যে কোন প্রপার নেই রবীন্দ্রনাথের গানের ietor. এর মানে কি রবীন্দ্রনাথের সব রচনা অকেজো হয়ে গেছে? কে তার গান দিয়ে যা খুশি করতে পারে? স্ট্যাটাসের শেষে হিরো আলমের নামে হুমকি দিয়ে লেখেন, ‘অন্য কারো সৃষ্টি নিয়ে এমন হৈচৈ করার অধিকার কারো নেই। এদেশে কি এত রবীন্দ্রনাথ প্রেমিক থাকবে? অন্যথায় আমার তালিকায় থাকা আইনজীবীরা আমাকে সাহায্য করুন, আমি মামলা করব।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনকে কেন্দ্র করে হিরো আলম ব্যাপক সমালোচনার দ্বার প্রান্তে দাড়িয়ে থাকে। এবার আবার রবীন্দ্রসংগীত বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। হিরোর কন্ঠে রবিন্দ্রসঙ্গিত প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই হিরো আলমের কমেন্টে একের এক যোগ হচ্ছে মতামত যা সবই হিরোর বিরুদ্ধে। এমনকি পুলিশের সাইবার ক্রাইমের উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম তার ফেস//বুকেও লিখেছেন হিরো আলমকে নিয়ে। সুরকার লুৎফর হাসান লিখেছেন, হিরো আলমকে এখনই নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, প্লিজ ভাই। সাইবার ক্রাইমের উপ-পুলিশ কমিশনারের স্ট্যাটাসে ইতিমধ্যে ব্যাপক মন্তব্য এসেছে যার বেশির ভাগ মন্তব্যই হিরো আলমের বিরুদ্ধে। আর তার ভিতরে বেশিরভাগই বলছে, কেউ একজন হিরো আলমকে থামান।