বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁটালিয়া) আসনে প্রার্থী হওয়া মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরের (বীর উত্তম) নামে কোনো মামলা নেই। তিনি হলফনামায় বলেছেন যে তিনি বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি নন। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে তিনি গাড়ি পোড়ানোসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া শাহজাহান ওমরের হলফনামায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি দুটি মামলার কথা উল্লেখ করেন। এবার তিনি কোনো মামলার তথ্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বাড়ি, কৃষিজমি ও অ্যাপার্টমেন্টকে স্থাবর সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করলেও এবার স্থাবর সম্পদ হিসেবে কিছু উল্লেখ করেননি।
হলফনামা অনুযায়ী, শাহজাহান ওমর কৃষি থেকে দেড় লাখ টাকা, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১৯,৪৫,২৭৭ টাকা, ব্যবসা থেকে ১,৯৭,৬৬৭ টাকা এবং শেয়ার ও ব্যাংক লভ্যাংশ থেকে আয় করেছেন ৯,১৬,২২৬ টাকা। তবে ২০১৮ সালে তিনি কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার, শেয়ার ও ব্যাংক লভ্যাংশ থেকে ১৬ লাখ ৫৬ হাজার ২৩২ এবং পেশা থেকে ১ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা উল্লেখ করেছেন।
অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে শাহজাহান ওমরের কাছে নগদ ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৫২৭, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৮৫৭, এফডিআর হিসেবে ১ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা আছে। তবে ৫ বছর আগের হলফনামায় নগদ ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৪৪, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৩ এবং এফডিআর হিসেবে ২ কোটি ১২ লাখ ৪২ হাজার টাকা ছিল। সেই হিসাবে তার অস্থাবর সম্পদ কমেছে।
তবে হলফনামায় শাহজাহান ওমরের স্ত্রীর নামে সম্পদ বেড়েছে। ২০১৮ সালে তার স্ত্রীর নামে নগদ ৭০ হাজার ৮৭৭ টাকা থাকলেও ২০২৩ সালে ৩৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা আছে। অর্থাৎ ৫ বছরে স্ত্রীর কাছে প্রায় ৫০ গুণ নগদ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯১৩, স্থায়ী আমানত ও এফডিআর বাবদ ১ কোটি ১ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৩ লাখ ৪৭ হাজার ২১২, স্থায়ী আমানত ও এফডিআর ১ কোটি ৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৯ টাকা ছিল।
শাহজাহান ওমরের ৬০ লাখ ৭০ হাজার মূল্যের একটি গাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রীর গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ ৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাদের দুজনেরই আসবাবপত্রসহ আরও ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও একই ধরনের বিষয় উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়, শাহজাহান ওমর নিজের এবং তার স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ হিসাবে কৃষি জমি, অকৃষি জমি, বাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্টের হিসাব দেন। ২০১৮ সালে তাদের নামে কৃষি ও অকৃষি জমির দাম দেখানো হয়েছে ৪৫ লাখ ৮৭ হাজার ৭৬১ টাকা। বরিশাল ও রাজাপুরে মোট তিনটি বাড়ি ও পাকা ভবন দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ৫০৮ টাকা দেখানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় একটি খামারের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৮ লাখ ২৪ হাজার ৫০৮ টাকা। এই হলফনামায় তিনি পাঁচ বছরে কোনো স্থাবর সম্পদের হিসাব দেননি। তবে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া বাবদ আয় দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ৪৫ হাজার ২৭৭ টাকা।