পাকিস্তানের ১২ তম সাধারণ নির্বাচন 8 ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে৷ সেই হিসাবে, ভোটের জন্য এক মাসেরও কম বাকি৷ সম্প্রতি দেশটির সংসদ নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব পাস করেছে। পাসকৃত প্রস্তাব গ্রহণের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আচরণে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠছে।
এমন প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে। পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরুর পর এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি কারচুপি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
নির্বাচনের আগে কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দিতে ব্যস্ত নির্বাচন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে দেশটির আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ স্বেচ্ছায় নির্বাসনে গিয়ে দেশে ফিরেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো বাতিল করা হয়েছে।
সমালোচকরা আসন্ন নির্বাচনে প্রাথমিক কারচুপির প্রমাণ হিসাবে পিটিআই এবং এর নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাজ্য কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থানের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, বলেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান এবং তার দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না।
ইতিমধ্যে অনেক নেতা পিটিআই ছেড়েছেন। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই মাথা ঢেকে রেখেছেন। আবার পিটিআই ছেড়ে আসা কিছু নেতা প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ইমরান ও তার দলের অনেক সমর্থকের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে।
পিটিআইয়ের পাঞ্জাব রাজ্যের তথ্য সচিব শায়ান বশির আল জাজিরাকে বলেছেন, “পিটিআই এবং এর নেতাদের বর্বরতা পাকিস্তানের ইতিহাসে কখনও ঘটেনি।”
বশির আরও বলেন, মনোনয়নপত্র লুটপাট, পিটিআই প্রার্থীদের চাপের মুখে দল ত্যাগে বাধ্য করার মতো ঘটনাগুলো দেখায় দলকে কী করতে হবে।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করছেন, দেশের সামরিক বাহিনী নওয়াজ শরিফের দিকে ঝুঁকছে। যিনি গত বছরের নভেম্বরে দেশে ফিরেছিলেন। দেশটির আদালত নওয়াজের প্রার্থীতার বিরুদ্ধে আইনি বাধা দ্রুত দূর করেছে। শিক্ষাবিদ ফয়েজ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান পরিবেশ ‘প্রহসনমূলক’। দল বদলেছে, নেতা বদলেছে, কিন্তু পদ্ধতি ও উন্মাদনা একই রয়ে গেছে।
লাহোর-ভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাহির মেহেদি আল জাজিরাকে বলেছেন, “আমি কারচুপির পরিবর্তে কারচুপির নির্বাচন শব্দটি ব্যবহার করতে পছন্দ করব।”