সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দেশের বাইরে নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। আর এ জন্য রীতিমতো এবার আট-ঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
তবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপি চাইলে বিদেশ থেকে বড় ডাক্তার আনতে পারে- আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন বক্তব্য সমর্থন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিদেশ থেকে যেকোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারে।
রোববার (২১ নভেম্বর) সচিবালয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক পাঁচটি দলের নেতারা খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন নিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতালগুলো ওয়েল ইক্যুইপ্ট। বিদেশ থেকে যেকোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারে। যেই চিকিৎসা ওখানে করা যায়, বিদেশি ডাক্তার এলে সেই চিকিৎসা এখানেও করতে পারেন। কিছুক্ষণ আগে ইউনাইটেড হাসপাতালের একজন ডাক্তার আমার এখানে এসেছিলেন, তিনিও আমাকে একই কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের (বীর প্রতীক) নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ক্বারি এমএ তাহের, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০ দলের যে জোট, সেই জোটের পাঁচ সদস্য এখানে এসেছেন। তাদের আবেদনটি ছিল যে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি একদম জীবনের শেষ প্রান্তে এসেছেন। কাজেই তাকে আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যায় কি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের একটি আবেদন, এখানে নিয়ে এসেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমি তাদেরকে যথার্থই বলেছি যে, এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার ছোটভাই একটা আবেদন করেছিলেন। সেটাও আমি আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম। আইনমন্ত্রী যথাযথভাবে পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তরের সময় বিস্তারিত বলেছেন। আমি এটা বলার পর তারা বলেছেন- এটা মানবিক কারণে দেওয়া যায় কি না, বিবেচনা করার জন্য আমার কাছে পত্র দিয়েছেন। এটা আমি যথাযথভাবে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেব।
মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক) সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ৫টি রাজনৈতিক দলের প্রধানরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য এসেছিলাম। তিনি আমাদেরকে সময় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের আসার উদ্দেশ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা, বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করা, একটি বিষয়ে, সেটি হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা। তাকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন করতে আমরা এসেছিলাম। লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি। মৌখিকভাবেও ব্যাখ্যা করেছি।
মন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন, জানান মুহাম্মদ ইবরাহিম।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষে খোঁজ খবর রাখছেন নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, উন্নত চিকিৎসার জন্য যদি বেগম জিয়াকে এই মুহুর্তে দেশের বাইরে যেতে না দেয়া হয়, তাহলে পরবর্তীতে তার কিছু হলে এ দায় সরকারকে বহন করতে হবে।