তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত নয় কিন্তু তিনি মাঝে মাঝে অনেকটা হঠাৎ করেই আলোচনায় আসেন। তিনি রাজনীতিতে আগে বেশ সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে কিছুটা অন্যরকম দাবি নিয়ে সক্রিয় থাকে। তিনি রাজনৈতিক ইস্যুকে এখন প্রাধান্য দেন না বা রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো সমাবেশ করেন না, তিনি বর্তমানে তার নিজস্ব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্বের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। আবার কিছুদিন পর পর তিনি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হন এবং তাকে নিয়ে আলোচনাও কমে যায়, যদিও তিনি ফে”সবুকে সক্রিয় থাকেন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ ৩ নভেম্বর জেলহ”/ত্যা দিবসকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ ঘোষণার দাবি নিয়ে সর্বশেষ আলোচনায় আসেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ৩১ অক্টোবর জাতীয় জেলহ”/ত্যা দিবস পালনসহ তিন দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেন। তার অন্য দুটি দাবি হলো ১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা এবং জীবনী ও অবদান অন্তর্ভুক্ত করা। পাঠ্যপুস্তকে জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল বেসা”মরিক-সাম”রিক সংগঠক, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল এসব দাবিতে গণভবন ঘেরাও কর্মসূচি দেন সোহেল তাজ। ওইদিনের কর্মসূচিতে তার বোন মাহজাবীন আহমেদ ও আইনজীবী তুরিন আফরোজসহ দেড় শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা হেঁটে গণভবনের গেটে যান। সেখানে পৌঁছে তারা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন।
৩ নভেম্বর জেলহ”/ত্যা দিবসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জেলহ”/ত্যা দিবসকে জাতীয় দিবস করার জন্য সোহেল তাজের দাবি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জেলহ”/ত্যা দিবসকে জাতীয় দিবস করার বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়।
এছাড়া আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে সোহেল তাজের ছোট বোন মাহজাবীন আহমেদ মিমির একটি ফে”সবুক পোস্টকে ঘিরে আলোচনায় আসেন তোহেল তাজ। ১১ আগস্ট মাহজাবীন তার ফেস’বুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিল অধিবেশনে তানজিম আহমেদ (সোহেল তাজ) দলীয় নেতৃত্বে আসছেন ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! জয়তু শেখ হাসিনা!! বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’
তার স্ট্যাটাসের ভিত্তিতে একটি গণমাধ্যমে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে সোহেল তাজ বড় পদ পেতে পারেন। কিন্তু তারপর আবার এই আলোচনা থেমে গেল।
এর কয়েকদিন পর ২৫ আগস্ট কয়েকশ সমর্থক নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান সোহেল তাজ। সাংবাদিকরা সেদিন তার দলীয় কার্যালয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে সোহেল তাজ বলেন, আমি কিছুক্ষণ ব্যক্তিগত কাজে ছিলাম। এখন দলীয় কার্যালয়ে আসছি, নিয়মিত আসার চেষ্টা করবো।
কিন্তু এরপর তিনি আর দলীয় কার্যালয়ে যাননি। দলের কোনো কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তর থেকে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত দলীয় কোনো কর্মকাণ্ড বা কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়নি।
বাবা প্রয়াত তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকীতে কোনো কর্মসূচি না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে সোহেল তার ফেস’বুকে পোস্ট দেন। তার পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় তাজউদ্দীন আহমদের জন্মদিন নিয়ে ফেস”বুক পেজে একাধিক পোস্ট দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতাকে কথা বলতে চাইলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
আনোয়ার হোসেন যিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন তিনি এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সোহেল তাজকে বর্তমান সময়ে কিছুটা আলোচনায় আনার জন্যই এসব স্টান্টবাজি চালানো হচ্ছে। তিনি আসলে কোনো ধরনের ভালো কাজের মাধ্যমে অবদান রেখে আলোচনায় আসেননি, প্রকৃতপক্ষে সংবাদ মাধ্যম বা যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসছেন যেসব বিষয় নিয়ে বা তাকে নিয়ে যে লেখালেখি হয়েছে সেগুলো তার নিজের অপরিপক্ক আচরণ।