সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে এক তরুণকে বিয়ে করে ওই শিক্ষিকা। তবে ওই তরুণ শিক্ষিকার থেকে বয়সে অনেক ছোট হওয়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। কিন্তু কোনো বাধাই তাদের সম্পর্কের চিড় ধরাতে পারিনি তারা এক সাথে সংসার শুরু করে। বর্তমান সমাজে অসম বিয়ে সাধারনত মেনে নিতে চায় না। সমাজ ব্যবস্থায় কারনে না ধরনের সমালোচনা ও কুটুক্তির শিকার হতে হয় ওই শিক্ষিকাকে।
নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করে সারাদেশে ভাইরাল হওয়া খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মরদেহের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃ/ত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক (আরএমও) সামিউল ইসলাম শান্ত জানান, শিক্ষক খায়রুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বা/সরোধে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে, ভিসেরা রিপোর্ট আসলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে পুলিশ মামুনকে গ্রেপ্তার করলে মামুন সাংবাদিকদের বলেন, খায়রুন নাহারের বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যবসায় ১৬ লাখ টাকার বেশি ঋণ রয়েছে। এদিকে তার ছেলেকে ছয় লাখ টাকার মোটরসাইকেল কেনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এসব নিয়ে মানসিকভাবে বেশ চাপে ছিলেন খায়রুন নাহার। তাই সে আ/ত্মহত্যা করেছে।
নি/হত সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ভাতিজা নাহিদ হাসান বলেন, নতুন এ বিয়ের পর থেকেই মামুন তার ফুফুর কাছ থেকে মোটরসাইকেলসহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। নতুন আর ওয়ান-৫ মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য ফুফুকে চাপ দিচ্ছিল। তিনি বলেন, মামুন নেশাগ্রস্ত ছিল। মামুনের চাপে তার তার ফুফু আ/ত্মহত্যা করেছে। নি/হত সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবির উদ্দিন জানান, অসম বয়সী এক ছাত্রীকে বিয়ে করায় খায়রুন নাহারের কলেজ সহকর্মীরা কেউ তার সঙ্গে কথা বলত না। বাবা-মাসহ আত্মীয়স্বজনরা যোগাযোগ রাখতেন না। বিয়ের পর ফেসবুকে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন খায়রুন নাহার।
এ বিষয়ে মামুনের স্বজনদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তার বাবা মোহাম্মদ আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ। তার চাচা আহমেদ আলী মেম্বারকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার পর নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, পিবিআই পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ সুপার মহসিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় পিবিআই পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন বলেন, সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও তদন্ত অগ্রসর হলে এ বিষয়ে পরিস্কার কিছু বলা যাবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, বিষয়টি আ/ত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। খায়রুন নাহারকে কীভাবে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে ওড়না জ্বালিয়ে তার স্বামী তাকে নিচে নামিয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য। কাপড় ও ফ্যানের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। তারপরও স্বামী মামুন মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বাইরে থাকাসহ সব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর এবং পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, ওই শিক্ষিকা শ্বাসরোধ হওয়ায় মা/রা গেছেন বলে জানান ময়নাতদন্ত কারী চিগিৎসক তবে প্রকৃত কি কারনে তার মৃ/ত্যু হয়েছে রির্পোট পেলে জানা যাবে। পুলিশের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার ধারনা করা হচ্ছে কিন্তু এখনো তারা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান।