নগদ অধিকাংশ ব্যবসায়ী এবং সাধারন মানুষ নিজের ন গদ অর্থের নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। তবে সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক ভিন্ন ঘটনা উঠে এসেছে প্রকাশ্যে। এক ব্যবসায়ীর বাড়ী থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় আয়কর দফতর অভিযান চালিয়ে ন গদ ২৮০ কোটি টাকা সহ বিপুল পরিমান সম্পদের খোঁজ পেয়ছে। অবশ্যে আয়কর দফতর জানিয়েছে কর ফাঁকি দিতেই এমন কান্ড করেছে ঐ ব্যবসায়ী।
যেদিকে তাকানো যায়, সে দিকেই টাকার নোট! পীযূষ জৈন নামে কানপুরের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২৮০ কোটির টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর বিভাগ। দুবাইয়ে রয়েছে দু’টি বিলাসবহুল বাড়ি। এ ছাড়াও মুম্বাই, কানপুর দিল্লি-সহ দেশের নানা জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে তার। ১২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে আজ সোমবার গ্রেফতার করা হল কানপুরের সেই ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনকে। সোমবারই তাকে আদালতে তোলা হয়।কেন্দ্রীয় আয়কর দফতর জানিয়েছে, কোনও এক জন ব্যক্তির কাছ থেকে ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি নগদ উদ্ধার করল আয়কর দফতর। এর মধ্যে পীযূষকে নিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অভিযোগ, পীযূষ সমাজবাদী পার্টির ঘনিষ্ঠ। সমাজবাদী পার্টির তরফে অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যোগীর জমানায় সব ধরনের দুর্নীতি বেড়ে গিয়েছে। আয়কর দফতর সূত্রে জানা গেছে, নগদ ২৮৪ কোটি টাকা ছাড়াও হদিশ পাওয়া গিয়েছে দেশে-বিদেশে বহু সম্পত্তির। যার মধ্যে কানপুর এবং কনৌজ মিলিয়ে পীযূষের সাতটি সম্পত্তি রয়েছে। মুম্বাইয়ে দু’টি বাড়ি, দিল্লিতে একটি এবং দুবাইয়ে দু’টি সম্পত্তি রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছ থেকে মিলেছে কয়েক কিলো সোনা।
সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, মোট ১২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর পর পীযূষকে ৫০ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়েছে। তার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তল্লাশি এখনও শেষ হয়নি। গত সপ্তাহে পীযূষের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। প্রথম দিন ১৫০ কোটির নোট উদ্ধার করে আয়কর বিভাগ। কানপুরের আয়কর বিভাগ যে ছবি প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায়, আধিকারিকেরা মাটিতে নোটের স্তূপের মধ্যে বসে মেশিনের সাহায্যে টাকা গুনছেন। মোট তিনটি টাকা গোনার মেশিন এনে প্রায় দু’দিন ধরে টাকা গোনা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন শহরে তাঁর সংস্থাতেও তল্লাশি করা হয়। কনৌজে তার পৈতৃক বাড়িতে ১৮টি আলমারির হদিশ পান তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে ৫০০টি চাবির থোকাও পেয়েছেন তারা। সেই চাবিগুলি দিয়ে ওই আলমারি খুলে তল্লাশির চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন তারা এত সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও পীযূষ অত্যন্ত সাধারণ পুরনো একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। তদন্তকারীদের অনুমান, তার উপর যাতে কারও সন্দেহ না হয়, সে জন্যই তিনি এটা করতেন। সুগন্ধি দ্রব্যের ব্যবসা ছাড়াও পেট্রল পাম্প, পানমশলা-সহ একাধিক ব্যবসা ছিল তার।
এদিকে এই ঘটনাটি আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে। এমনকি প্রথম বারের মত দেশটির আয়কর দফতর অভিযান চালিয়ে এত নগদ অর্থ জব্দ করেছে। ইতিমধ্যে এই অভিযানের টাকা গননার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।