হক গ্রুপের চেয়ারম্যান আদম তমিজি হক অসংখ্য বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আদম তমিজিকে গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তমিজির বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে উল্লেখ করে হারুন অর রশিদ বলেন, তার বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা রয়েছে। আদম তমিজির স্ত্রীরাও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। এসব কারণে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি।
হারুন বলেন,
আদম তমিজির সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা নেই। হঠাৎ তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলতে শুরু করলেন যে তার মা হাফ ইসরাইল। তিনি তাকে উদ্ধারের জন্য ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তাকে উদ্ধারের জন্য আবারো আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তাকে আটকে রেখেছে। বাংলাদেশ সরকার যদি তাকে গ্রেপ্তার করত, তবে বিমানবন্দর দিয়ে আসার সময় তারা তাকে আটকাতে পারত। এয়ারপোর্ট দিয়ে এসে এমন পাগলামি করেছেন তিনি। তাছাড়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট পু/ড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখান তিনি। যে দেশে তার ফ্যাক্টরি, যে দেশের ফ্যাক্টরি দিয়ে সে চলে সেই দেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে দিয়েছে সে। এটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষ/ড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, তমিজিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অসংলগ্ন মন্তব্য করেছেন তিনি। মানসিকভাবে অসুস্থ হলে তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হবে। আর যদি তিনি রাষ্ট্রের মানহানির উদ্দেশ্যে এমনটি করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে রাতে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসা থেকে আদম তমিজিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হ/ত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আদম তমিজি হকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। আনিছুর রহমান নাঈম নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় এ মামলা করেন।
১৩ নভেম্বর রাত ১১টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে আদম তমিজি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এ সময় তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, হক গ্রুপ ও কর্মীদের রক্ষায় দেশে ফিরেছেন। এরপর ১৫ নভেম্বর গুলশানে তার বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।
এ সময় র্যাব জানায়, তমিজির বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে সরকারের সমালোচনা করেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া এবং সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন-এর কথিত উপদেষ্টা মিয়া আরাফির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে তমিজি হক ফেসবুকে ঘোষণা করেন যে গাজীপুরের এক প্রতিমন্ত্রী তার ব্যবসা বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছেন। ব্যবসা রক্ষার জন্য তাকে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে বাধ্য করে। এরপর ফেসবুক লাইভে নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিয়ে কটূক্তি করেন তিনি। পরে তাকে তার দলীয় পদ থেকে দ্রুত বরখাস্ত করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ বরখাস্ত করে।