বর্তমান সময়ে আদালতে একটি ভিন্ন ধরনের পারিবারিক মামলা চলমান রয়েছে যেখানে বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মা তাদের সণ্তানদের কাছে রাখার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে মামলাটি নিয়ে আদালত মানবিক বিষয় বিবেচনা করে রায় ঘোষনা দিলেও সেই রায়ের পর ফের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে যখন বাবা বাংলাদেশে থাকা দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়েকে নিয়ে আত্মগোপন করেন, অপর দিকে রায়ের পর জাপানি মা বড় মেয়েকে নিয়ে অনেকটা গোপনে জাপানে যাওয়ার চেষ্টা করে। এবার ছোট মেয়েকে নিয়ে ফের রায় দিলেন আদালত।
আদালত আদেশ দিয়েছেন যে, জাপানি বংশোদ্ভূত দুই সন্তানের মধ্যে ছোট নাকানো লায়লা লিনা একদিন তার বাবার সাথে এবং একদিন তার মায়ের সাথে পর্যায়ক্রমে থাকবে। এছাড়া পারিবারিক আদালতের রায় অনুযায়ী বড় মেয়ে মায়ের হেফাজতে থাকবে। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন। এদিন লায়লা লিনাকে আদালতে হাজির করেন গুলশান থানার এসআই মামুন মিয়া।
এ সময় মা নাকানো এরিকোর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির ও বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে আইনজীবী নুরুল ইসলাম মিলন লিনাকে তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন। এদিকে লিনা স্বেচ্ছায় বিচারকের সঙ্গে কথা বলতে চায়। এরপর বিচারক খাস কামরায় লিনার কথা শোনেন। আদেশের আগে বিচারক বলেন, লিনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে তার বাবার সাথে থাকতে চায় বা ভি”কটিম সাপোর্ট সেন্টারে যেতে চায়। মায়ের সঙ্গে জাপান যেতে চায়নি সে। কিন্তু মায়ের কাছে থাকবে না, এটা বলেনি।
পরে দুপুর ২টায় উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ১৬ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আপিলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত লায়লা লিনাকে একদিনের জন্য তার বাবা ও তার মায়ের নিকট আরেকদিন হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ছোট মেয়ে নাকানো লায়লা লিনা আজ থেকে আগামীকাল সকাল ১১টা পর্যন্ত বাবার সঙ্গে থাকবেন। সকাল ১১টার পর তাকে মায়ের হেফাজতে রাখা হবে। বাবা-মায়ের কাছে এমনভাবে থাকতে হবে দিনের পর দিন। আর বাবা ও মায়ের হেফাজত পরিবর্তন করবে গুলশান থানা-পুলিশ। আদালত বিষয়টি তদারকির জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আদালত আদেশে আরও বলেন, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সন্তানদের দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের উচিত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলা।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে দুই জাপানি সন্তানকে হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিকে রায়ের বিরুদ্ধে গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার জেলা জজ আদালতে পারিবারিক আপিল করেন বাদী ইমরান শরীফ। আপিল শুনানির জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
তবে এই পারিবারিক বিষয়টি নিয়ে অনেকের মাঝে কৌতূহল দেখা দিলেও তারাও বাবা মায়ের মাঝে একটি সমাধান চাইছেন। কারণ এই দম্পতির ঘরে রয়েছেন তিন তিনটি সন্তান রয়েছে।, যাদের এই দুজন বাবা মাকে অবশ্যই দরকার। তাই বাবা মায়ের উচিৎ মানবিক দিক বিবেচনা করা। তবে আগামিতে কী হবে সেটা এখন দেখার বিষয়।