নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে পদ্মা বহুমূখি সেতু। বর্তমান সরকার প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতুর কাজ শেষ পর্যায় এ মাসেই যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ২৫ শে জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের করা হবে।এবার এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে যা বললেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
পদ্মা সেতুর গর্জিয়াস অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি জানিয়ে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, সীতাকুণ্ডের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মাসেতুর ’জাঁকালো’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করে ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠানের অর্থ দুর্ঘটনায় নি/হতদের বিপন্ন পরিবার এবং আহতদের পুনর্বাসনে বরাদ্দ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আসম রব বলেন, সীতাকুণ্ডের আহাজারিতে সমগ্র জাতি মর্মান্তিক বেদনায় শোকার্ত তখন অস্বাভাবিক ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের নামে ’জমকালো’ অনুষ্ঠান হবে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের প্রতি সরকারের চরম নিষ্ঠুরতার বহিঃপ্রকাশ। সরকারকে অবশ্যই এই ‘নির্মম পদক্ষেপ’ নেওয়া থেকে সরে আসতে হবে।
রাষ্ট্র কখনো ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে না বরং সব অনুষ্ঠানই অনাড়ম্বরে সীমিত রাখে। জনগণের সম্পদের অপচয় রোধ করে তা নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। ফলে নৈমিত্তিক অনুষ্ঠানের বাইরে সরকার কোনো বিলাসবহুল অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে না। রাষ্ট্র, ব্যক্তি, মালিকানাধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়।
এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রয়োজন নেই। জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদা রক্ষা করা হয়। গর্জিয়াস, আড়ম্বরপূর্ণ, রাজকীয় আয়োজন একটি গণপ্রজাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত শুধু বিশ্ব অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তিই উজ্জ্বল করেনি, জাতির আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হলো, সুপার গর্জিয়াস অনুষ্ঠান করে আর কী অর্জন হবে?
তিনি বলেন, “যেসব জেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নামে রোড শো, লেজার শো, আতশবাজি সারা বিশ্বে ইলেকট্রনিকভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখা যাবে তা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।” জনগণের সম্পদের অতিরিক্ত অপচয় আত্মতুষ্টির বিষয় হতে পারে না।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মন্দার মুখে, বাংলাদেশের আমদানি, রপ্তানি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সাথে একটি নড়বড়ে অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যেখানে অপ্রয়োজনীয় এবং বিলাসবহুল পণ্য আমদানির উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, তথাকথিত ‘সুপার গর্জিয়াস’ বিলাসবহুল বিলাসবহুল অনুষ্ঠান কোন ক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
পদ্মা সেতুর সুপার গর্জিয়াস উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মার সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনেক জাঁকজমক ভাবে করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আ স ম আবদুর রব বলেন সীতাকুণ্ডের দুর্ঘনায় সমগ্র জাতি এখন মর্মাহত এ সময় এমন একটি অনুষ্ঠান করা ঠিক হবে না।