বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি খুব জনদরদী একজন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা রয়েছে সীমাহীন, জনগনের দুঃখ তিনি একটুও সইতে পারে না। আর তাই প্রধানমন্ত্রী বানভাসীদের সাহার্যার্থে দিয়েছেন ৫ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য।
বন্যায় সিলেটে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে পাঁচ হাজার পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও সহায়তা করা হবে। আগামীকাল সোমবার থেকে এ টাকা বিতরণ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। ধীরগতিতে পানি নামায় এখনো কয়েক হাজার পরিবার রয়েছে পানিবন্দি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি বাসযোগ্য না হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে পারছেন না ৩৫ হাজার মানুষ।
বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট থাকায় ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ। সবমিলিয়ে বন্যাদুর্গত লোকজনকে পুনর্বাসন এখন অনেকটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ৪১ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। মাঠ প্রশাসন ঘরবাড়ি ভেঙেছে এমন পাঁচ হাজার পরিবারের তালিকা তৈরি করে টাকা দেবে।
রোববার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বন্যা পরিস্থিতি, বন্যার পর পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে সিলেটে পাঁচ কোটি টাকা অনুদানের চেক পাওয়া গেছে। এ টাকা থেকেই প্রথম ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ হাজার পরিবারকে সহায়তা করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও সহায়তা করা হবে।
তিনি বলেন, সোমবার থেকে শুরু হবে এ টাকা বিতরণ। মূলত এবারের বন্যায় যেসব পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের এ টাকা দেওয়া হবে।
গত ১৫ জুন থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় জেলায় প্রায় ৪১ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত পাঁচ লাখ পরিবারের ৩০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো বেশিরভাগ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক আরও জানান, বর্তমানে ৩৫ হাজার ৬৮৫ জন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেট জেলায় ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ জন লোক আশ্রয় নেন। অনেক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজেদের বাসা-বাড়িতে ফিরে গেছেন। তবে এখনো ৪১৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজার ৬৮৫ জন লোক অবস্থান করছেন।
জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে আরও ৩১ হাজার ৯৭টি গাবাদিপশু নিয়ে এসেছিলেন বন্যাকবিলিতারা। বর্তমানে ৫৩০টিবাদিপশু আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৩১ হাজার ৯৭টি গবাদিপশু নিয়ে এসেছিলেন বন্যাকবলিতরা। বর্তমানে ৫৩০টি গবাদিপশু আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিলেট জেলা সহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যার পানিতে সম্পূর্ণভাবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সেখানকার মানুষের কষ্টের কোনো সীমা নেই। ঘর-বাড়ি এবং গৃহপালিত পশুহারিয়ে তারা একেবারে হয়ে পড়েছে নিঃস্ব।