সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যার কারণে সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবারের মাধ্যমিক, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা আগামী রোববার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, যাতে অংশ নিতে অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বলেন, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি সাধারণ, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরিবর্তিত পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।
দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামী ১৯ জুন থেকে অনুষ্ঠিতব্য সকল শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক, এসএসসি ভোকেশনাল ও মাদ্রাসা বোর্ডের প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিকল্প পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে। শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। টানা বর্ষণ ও ভূমিধসে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। শুক্রবার সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বানভাসিদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
এছাড়া ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও খাড়া ঢলের কারণে নেত্রকোনায়ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তলিয়ে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। তিনি বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কঠিন হবে।
উল্লেখ্য, ভারতের মেঘালয়-আসামে ভারী বর্ষণের কারণে উপরিভাগ থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যার সম্মুখীন হয়েছে সিলেট অঞ্চল। সুনামগঞ্জ শহরে কোনো একতলা বাড়িতে পানি উঠতে বাকি নেই। সদর ছাড়াও দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। সিলেট নগরীতেও পানি প্রবেশ করেছে উল্লেখযোগ্যহারে। জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা এখন পানির নিচে প্লাবিত। এসব এলাকার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে দুর্গাতা। দুর্ঘটনা এড়াতে সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।