দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা বিএনএমে যোগ দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা। সেই আলোচনায় ঘি ঢেলে দিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী।
তিনি দাবি করেন, দ্বাদশ নির্বাচনের আগে সাকিব আল হাসান বিএনপিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু বিএনপিতে তাকে গ্রহণ করা হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সমসাময়িক রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টকশোতে অংশ নিয়ে নিপুণ রায় এ মন্তব্য করেন।
নিপুণ রায় বলেন, সাকিব আল হাসানের বিএনএমে যোগদানের বিষয়টি মেজর (অব.) হাফিজ স্পষ্ট করেছেন। মেজর হাফিজের কাছে গেলেন বিএনএমের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তাছাড়া, মেজর হাফিজ বিভিন্ন উপায়ে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়ের পুত্রবধূ নিপুণও বলেন, আমি সাকিব আল হাসানকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ এই সাকিব আল হাসানও বিএনপিতে আসার জন্য নির্বাচনের আগে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি বিএনপিতে যোগ দিতে হাসপাতালে জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন।
বিএনপিতে যোগ দিতে কবে যোগাযোগ করেন সাকিব? এমন প্রশ্নের জবাবে নিপুণ রায় বলেন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচ হলে নির্বাচনের আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সাকিব। আমি এই সাকিব আল হাসানকে শ্রদ্ধা করি, কারণ তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। কিন্তু তিনি কখনোই স্বার্থের বাইরে চিন্তা করেন না। এটাকে ঘৃণা করে মেজর হাফিজকে আজ সাকিবের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে, এটা সরকারের উচ্ছ্বাস।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতারাও জানেন সাকিব আল হাসান কোনো কোনো ঘাটের পানি খেয়েছেন। অন্তত দশ ঘাটের পানি পান করেছেন সাকিব।
তারপরও আওয়ামী লীগের মতে, সাকিব অন্য জায়গায় যেতে পারেন। এ কারণে শিখরকে সরিয়ে সাকিবকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এই সাকিবই কাল হয়ে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।
নিপুণ জানান, সাকিব আল হাসান তারিক রহমানের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলতে চেয়েছিলেন। আমার নেতা তাকে সময় দেননি। এর প্রমাণ চাইলে সাকিব আল হাসানের বাড়ির ভিডিও চেক করেন।
সাকিব কীভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তা ব্যাখ্যা করলেন নিপুণ রায়। তিনি বলেন, আমার বাপের বাড়ি মাগুরা। এর ভিত্তিতে সাকিব আমার ভাইয়ের মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করে। তারিক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমাকে বেছে নেন সাকিব। তিনি ভেবেছিলেন কোথায় সুবিধা পাবেন। কারণ সুবিধাবাদী মানুষ সবসময় সুযোগ খোঁজে। একইভাবে তিনি বিএনএমের সাধারণ সম্পাদক মেজর হাফিজের কাছে যান। সেখানেও তিনি পাত্তা দেননি। পরে আওয়ামী লীগ নৌকা দিয়ে সেখানে যায়।
প্রসঙ্গত, মাগুরা-১ থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে জয়ী হন সাকিব আল হাসান। মনোনয়ন পেলেই দলের প্রাথমিক সদস্য হন সাকিব। এর আগে দলে ছিলেন না সাকিব। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেওয়ার সময় প্রাথমিক সদস্যপদ দেয়।