দেশে নজিরবিহীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক নৈরাজ্য চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে নজিরবিহীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক নৈরাজ্য বিরাজ করছে। ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে চলছে বেপরোয়া দখলদারিত্ব। দখলকৃত সম্পদ ভাগাভাগি করতে গিয়ে নিজেরা নিজেদের হ/ত্যা করছে। কুমিল্লা ও কুমিল্লাসহ সারাদেশে ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে আওয়ামী লীগ নেতাদের হ/ত্যা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা নারী ও শিশুদের বেপরোয়া লাঞ্ছনায় লিপ্ত হয়েছেন। একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭৬ শতাংশ শিশু নি/র্যাতনের শিকার হয় যৌ/ন নির্যাতনের শিকার। প্রতিপক্ষের নির্বিচারে গ্রেফতার, গণ-নি/র্যাতন, নারকীয় নি/র্যাতনের পাশাপাশি গ/ণধর্ষণ ও বাছাইকৃত খু/নের আধিপত্য চলছে জনপদে জনপদে। ফলে সমাজে এক ভয়াবহ ভয়, উদ্বেগ ও বিপদের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘নির্বাচন যে অনিয়ম বা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি তার প্রমাণ কোথায়? যারা অপরাধ করে তারা নিজেরাই নির্দোষ। প্রধানমন্ত্রী, আপনি নির্বাচন কারচুপির সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কারণ আপনার নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনের সচিব নিজেই বলেছেন, যারা জয়ী হবেন তাদের তালিকা ইতিমধ্যেই ডিসিদের দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, আপনার কারচুপির প্রমাণ শুধু আন্তর্জাতিকভাবে উঠেনি, অভ্যন্তরীণভাবেও এর জোরালো প্রমাণ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ফাঁকা ভোট কেন্দ্রে শুধু ছবি ও ভিডিও দেখা যায়নি, জালিয়াতির কারণে বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটরা আরও বেপরোয়া হয়ে লুটপাটে লিপ্ত হয়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, শাকসবজি, মাছ-মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে মানুষ এখন মাছের কাঁটা কিনে খাচ্ছে। মুরগির বদলে তারা কিনছেন মুরগির চা চামড়া ও ঠ্যাং। শুধু সরকারি দলের সিন্ডিকেটের কারণে এই ব্যস্ত মৌসুমে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।
জনস্বার্থের কথা বিবেচনা না করে কয়েক দফা অবৈধভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। আর বাড়ি ভাড়া বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির কোনো নীতিমালা নেই। কিন্তু সচিবরা একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে মাসিক মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় থাকেন।
তিনি আরও বলেন, একপক্ষের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। বিএনপি বহু মৃ/ত্যু সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দল। জনগণের সংগ্রামী ঐক্য, সংকল্প ও বীরত্ব নিয়ে একতরফা আন্দোলন দখলদার আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত করে বিজয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যে রাজনৈতিক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তা শেখ হাসিনা দমন করতে পারবেন না। জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।