আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের উপর বহির্বিশ্বের নজর রয়েছে এবং বাংলাদেশের এই নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের বার্তা দিয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ দেশ , বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নিরপেক্ষতার কথা বলছে দেশগুলোর মুখপাত্ররা। নজরদাতা দেশগুলো জনগণের ভোটাধিকার এবং জনগণের চাওয়ার মাধ্যমে সরকার নির্বাচন- এই দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। আমরা আশা করি এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ অবাধ ও স্বাধীনভাবে তাদের সরকারকে নির্বাচিত করবে। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ের একপর্যায়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটাধিকার চেয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে লাখ লাখ মানুষ সমাবেশ করছে। অন্যদিকে, সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি বেশি এগোলে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে কারাদ’ণ্ড দেওয়া আসলে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কি খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইবে নাকি?
জবাবে নেড প্রাইস বলেন, বিশ্বজুড়ে মার্কিন সম্পর্কসহ পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে তারা নিয়মিত আলোচনা করেন। তারা ব্রিফিং রুম থেকে এবং ব্যক্তিগত আলোচনা উভয় ক্ষেত্রেই জনসমক্ষে সমস্যাগুলি নিয়ে আসে। তিনি সকল বাংলাদেশীর স্বার্থে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালীকরণ এবং আইনের শাসন, মানবাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে- এমনটাই প্রত্যাশা যুক্তরাষ্ট্রের। তাই বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সকলের জন্য কোনো ধরনের ভ’য়ভী”তি ও দম’/ন-পীড়’/ন ছাড়া শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নেড প্রাইস বলেন, ‘বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। আমরা আশা করি সুশীল সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের সরকার নির্বাচন করতে সক্ষম হবে। এটাই আমাদের আশা। এই লক্ষ্যে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্যতম দুটি রাজনৈতিক দল- বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনকে ঘিরে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে আগেভাগেই আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এদিকে নিজেদের জনপ্রিয়তা জানান দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ বড় ধরনের সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচন একটি আলোচিত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর নজরদারি রাখা দেশগুলো নানা ধরনের বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।